আলোচনা নয়, আইন করে রামমন্দিরের নির্মাণের জন্য দেশ জুড়ে আন্দোলনে নামতে চলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। গত ২৪-২৫ মার্চ দিল্লির আর কে পুরমে পরিষদের কেন্দ্রীয় টিমের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে আদালতের বাইরে আলোচনা করে বিবাদ মেটাতে সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবও খারিজ করা হয়েছে।
আরও ঠিক হয়েছে, রামনবমী পর্ব মিটে যাওয়ার পর ১-২ জুন হরিদ্বারে বিভিন্ন মঠ-পীঠের সাধুসন্তদের নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় মার্গদর্শক মণ্ডলীর বৈঠক হবে। সেখানেই একমাত্র আইনি পথেই রামন্দিরের কথা ঘোষণা করবেন সন্তরা। অগস্ট মাস নাগাদ পরিষদ দেশব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আর চূ়ড়ান্ত ধাক্কা দেওয়ার জন্য ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর উদুপিতে ধর্ম সংসদ বসবে। রামমন্দির আন্দোলনের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত উদুপি মঠ থেকেই এর আগে নেওয়া হয়েছে। ১৯ বছর আগেও এমনই এক ধর্ম সংসদে মন্দির নির্মাণের সঙ্কল্প নেওয়া হয়েছিল। এ সবের মাঝেই অযোধ্যাতে আরএসএস তাদের সমস্ত সংগঠন নিয়ে একটি বড় সম্মেলন করবে বলেও জানা গিয়েছে। তার দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গেলেও এখন তা গোপন রাখা হয়েছে।
কেন আর আলোচনা চাইছে না বিশ্ব হিন্দু পরিষদ? সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র সুরেন্দ্র জৈন বলেন, ‘‘এর আগে ৫ বার আলোচনায় বসা হলেও কোনও সমাধান বেরোয়নি। এখন একটাই পথ সোমনাথ মন্দির নির্মাণের মতো আইন করা। বিজেপি সংসদে আইন এনে রামমন্দির নির্মাণের পথ খুলে দিক। এবং তা দ্রুত করা হোক।’’
আরও পড়ুন...
নরেন্দ্রই মুখ, মানলেন উদ্ধবও
যদি দ্রুত না হয়? সুরেন্দ্র জৈন বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে সারা দেশ কী চাইছে। কথাবার্তা অনেক হয়েছে আর নয়। দেশ জুড়ে ‘জনজাগরণে’ নামা হবে। সরকার আমাদের দাবি মানতে বাধ্য হবে।’’ তবে ঠিক কত দিনের মধ্যে রামমন্দির নির্মাণ শুরু করতে চান তা খোলসা করেননি ওই পরিষদ নেতা। তবে পরিষদের অন্দরের খবর, উদুপি ধর্ম সংসদের পরই আর পিছনে তাকাতে চায় না বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। কারণ, তত দিনে দেশের রাষ্ট্রপতি পদেও এই প্রথম কোনও আরএসএসের পছন্দের লোক বসে যাবেন। সেই কারণে মনে করা হচ্ছে, এখন রামমন্দির-আইনের জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হলেও শেষ লড়াইয়ের ঢাকে কাঠি পড়বে লোকসভা ভোটের বছরখানেক আগে থেকে। তবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সরাসরি রামমন্দির নির্মাণে অংশ নেবে না বলেও জানিয়েছে। সরকার যাতে রামজন্মভূমি ন্যাসের হাতেই মন্দির নির্মাণের ভার দেয় সেই দাবিও জানাচ্ছে তারা।
এ রাজ্যে আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবে ১১ এপ্রিল কলকাতায় সমাবেশ করবে পরিষদ। রামনবমী-হনুমানজয়ন্তী পালনের জন্য রাজ্যে ১২০০ কমিটি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিষদের পূর্বাঞ্চলের নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ। তিনি জানান, এ রাজ্যে এমন সাড়া পাওয়া যাবে তা ভাবা যায়নি। সেই জন্য ১৩ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত বজরঙ্গ দল ও দুর্গা বাহিনীতে সদ্য নাম লেখানো যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।