National News

সিদ্দার ঝান্ডায় পিছিয়ে যোগী

কন্নাডিগারা দাবি তুলেছেন, মেট্রো যখন আমাদের, স্টেশনের নাম আবার হিন্দিতে কেন? শুধু কন্নড় ও ইংরেজি থাক। হিন্দি হটাও। হিন্দি বলয়ের নেতা যোগী আদিত্যনাথ কর্নাটকের ভোটে প্রচারে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া তাঁকে ‘উত্তর ভারত থেকে আমদানি’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০৫:৩৭
Share:

যোগী আদিত্যনাথ

বেঙ্গালুরুতে মেট্রো রেলের নাম ‘নাম্মা মেট্রো’। বাংলা করলে, আমাদের মেট্রো।

Advertisement

কন্নাডিগারা দাবি তুলেছেন, মেট্রো যখন আমাদের, স্টেশনের নাম আবার হিন্দিতে কেন? শুধু কন্নড় ও ইংরেজি থাক। হিন্দি হটাও। হিন্দি বলয়ের নেতা যোগী আদিত্যনাথ কর্নাটকের ভোটে প্রচারে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া তাঁকে ‘উত্তর ভারত থেকে আমদানি’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন।

নরেন্দ্র মোদী বলছেন, ‘আমাকেও কন্নাডিগা ভাবুন’। সিদ্দারামাইয়া বলছেন, ‘বেশ তো। আপনি যখন কন্নাডিগা, তখন কন্নড় ভাষাকে অগ্রাধিকার দিন। সরকারি ব্যাঙ্কে চাকরির পরীক্ষাগুলো কন্নড়েই নেওয়া হোক!’ গুজরাতের মতো কর্নাটকেও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে মাঠে নামিয়ে বিজেপি ফায়দা তুলতে চেয়েছিল। কিন্তু জাতীয়তাবাদ ও হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী যোগী আদিত্যনাথ মাঠে নেমে দেখেন, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া নিজেই কন্নাডিগা প্রাদেশিকতাবাদের ঝাণ্ডা তুলে বসে রয়েছেন।

Advertisement

ঝান্ডা—আক্ষরিক অর্থেই। কন্নাডিগাদের অহঙ্কার উসকে দিয়ে সিদ্দারামাইয়া জাতীয় পতাকার মতো রাজ্যের নিজস্ব পতাকার অনুমোদন চেয়েছেন কেন্দ্রের কাছে। হলুদ, সাদা, লাল রঙের সেই পতাকার মাঝখানে রাজ্যের প্রতীক—পৌরাণিক পাখি গন্দবেরুন্দা-র ছবি।

এই প্রাদেশিকতাবাদের সামনেই যে যোগীর ‘জাতীয়তাবাদ’ তথা মেরুকরণের রাজনীতি দাঁত ফোটাতে পারেনি, তা বিজেপি নেতারাও মানছেন। যোগী চেষ্টা যে করেননি, তা নয়। প্রথম জানুয়ারিতে পরিবর্তন যাত্রায় এসে দাবি তুলেছেন, সিদ্দারামাইয়া গোমাংসে নিষেধাজ্ঞা জারি করুন। এরপর ভোটের আগে অভিযোগ তুলেছেন, কর্নাটকে কংগ্রেস জেহাদিদের আশ্রয় দিচ্ছে। হিন্দু নিধন চলছে। এতে উপকূলবর্তী কর্নাটকের তিন জেলা ছাড়া অন্যত্র বিশেষ লাভ দেখছে না বিজেপি। ওই তিন জেলা ব্যতিক্রম। কারণ,সেখানে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু, দু’দিকেই চরমপন্থার দাপট। একইসঙ্গে ইয়াসিন ভটকলদের মতো সন্ত্রাসবাদী ও শ্রীরাম সেনে-র মতো হিন্দু সংগঠনের আঁতুড়ঘর।

বিজেপি নেতারাও মানছেন, গুজরাতের মতো যোগী কর্নাটকে সাড়া পাননি। উত্তরপ্রদেশে ধুলোঝড়ের জন্য প্রচার কাটছাঁট করে যোগী ফিরে গিয়েছেন। সিদ্দারামাইয়ার কটাক্ষ, “উনি উত্তরপ্রদেশেই নজর দিন। সদ্য দু’টো লোকসভা আসনে হেরেছেন”।

মোদী-যোগীকে উত্তর ভারতীয় তকমা দিয়ে সিদ্দারামাইয়া বিজেপির অন্দরেও ফাটল ধরাতে চান। বলছেন, ‘লড়াই তো আমার সঙ্গে বি এস ইয়েদুরাপ্পার। এর মধ্যে হিন্দি বলয়ের নেতারা কেন?’ ইয়েদুরাপ্পার ছেলেকে বিজেপি টিকিট না দেওয়ায় কপট সহানুভূতি জানিয়ে বলছেন, উত্তরের নেতারা কন্নাডিগাদের পাত্তা দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীকেও ‘ডামি’ করে রেখেছে। বিজেপির সঙ্গে কন্নড় সংস্কৃতির ফারাক বোঝাতে তাঁর যুক্তি, কন্নাডিগারা ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাস করে। অথচ বিজেপির প্রার্থীদের মধ্যে কোনও মুসলমান-ক্রিশ্চান নেই।

বিজেপি-ও ফুট কাটছে। মোদী-যোগীকে বাইরের লোক আখ্যা দিয়ে সিদ্দারামাইয়া কি রাহুল বা সনিয়া গাঁধীকেও কর্নাটকে নাক না গলানোর বার্তা দিচ্ছেন? সিদ্দার জবাব, “রাহুল তো এমনিতেই আমাকে সরকার চালানো ও ভোটের নীতি ঠিক করার সব অধিকার দিয়ে রেখেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন