পিতা-পুত্র: রাজীবের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র
বাবার মৃত্যুর জন্য এই লোকটাই তো দায়ী! তার পরেও টিভিতে লোকটার ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া দেহটা দেখে কষ্টই হয়েছিল রাহুল গাঁধীর।
ওরা লোকটাকে কেন এত অমর্যাদা করছে? কষ্ট হয়েছিল লোকটার ছেলেমেয়েদের জন্যও। আসলে অনেক আগেই তো লোকটাকে মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন রাহুল এবং তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা।
লোকটা এলটিটিই নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরন। বাবা রাজীব গাঁধীর হত্যার মূল ষড়যন্ত্রী।
সিঙ্গাপুর সফরে গিয়ে শনিবার আইআইএম-এর প্রাক্তনীদের সভায় বাবা-ঠাকুমার মৃত্যু, পরিবার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আবেগতাড়িতই হয়ে পড়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর কথায়, ‘‘আমায় ঠাকুমা (ইন্দিরা গাঁধী) বলেছিলেন, ওঁকে মেরে দেবে। বাবাকেও আমি বলেছিলাম, তোমায় কিন্তু মেরে দেবে।’’ রাহুল বলেন, ‘‘রাজনীতিতে আপনি যখনই কোনও অশুভ শক্তির সঙ্গে লড়েন, কোনও নীতির পক্ষে দাঁড়ান, তা হলে আপনাকে মরতেই হবে।’’ তবু বাবার মৃত্যু একটা অন্য রকম যন্ত্রণা। ‘‘সেই কষ্ট-ক্ষোভ অনেক বছর তাড়া করেছে। রাগও হত। কিন্তু, তার পরে কোনও ভাবে পুরোপুরি... মানে পুরোপুরিই ক্ষমা করে দিয়েছিলাম ওদের।’’ তাই প্রভাকরনের দেহটা দেখে খারাপই লেগেছিল রাহুলের। পরে জেনেছেন, প্রিয়ঙ্কারও কষ্ট হয়েছিল। ‘‘সত্যিই খারাপ লেগেছিল ওঁর জন্য, ওঁর সন্তানদের জন্য। আসলে আমাদেরও এই অভিজ্ঞতাটা হয়েছিল। বুঝতাম।’’
রাহুলের এই অনুষ্ঠান ঘিরে আইআইএম-প্রাক্তনীদের উৎসাহ ছিল দেখার মতো। কংগ্রেস সভাপতিকে সামনে পেয়ে অনেকেই ছুড়ে দিয়েছেন প্রশ্ন। বাবা-ঠাকুমা-প্রমাতামহ— সকলেই প্রধানমন্ত্রী। এমন পরিবারে জন্মানোর কোনও সুবিধাই কি পাননি? এমন প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেন, ‘‘নির্ভর করে আপনি মুদ্রার কোন দিকে। ঠাকুমা যখন মারা যান, তখন আমার বয়স ১৪। যাঁরা ঠাকুমাকে গুলি করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলতাম। তার পরে বাবা মারা গেলেন। সকাল থেকে রাত— ১৫টা লোক আপনাকে ঘিরে রেখেছে। আমার তো মনে হয় না, এটা
কোনও সুবিধা।’’