অজিত ডোভাল। —ফাইল চিত্র।
ছুটিতে পাঠানো সিবিআই ডিরেক্টরের বাড়ির সামনে গোয়েন্দাদের নজরদারি হচ্ছে। এই নিয়ে প্রশ্ন করলে এক গাল হেসে এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তা, অধুনা মোদী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। অথচ ভোটের মরসুমে রাজনীতি নিয়ে বিস্তর কথা বলছেন অজিত ডোভাল।
দিল্লিতে আকাশবাণীর আয়োজনে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সর্দার পটেল স্মারক বক্তৃতার জন্য। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর-সহ মন্ত্রকের সব কর্তারাও হাজির। আর সেখানেই সরাসরি নাম না করে ডোভাল বললেন, ‘‘আগামী দশ বছর ভারতে স্থিতিশীল সরকারের প্রয়োজন। দুর্বল জোট খুব খারাপ হবে।’’ যা শুনে রাহুল গাঁধী জবাব দিলেন পরে, ‘‘একটু অপেক্ষা করুন, গোটা ছবিটা সামনে আসবে। রাফাল নিয়ে কংগ্রেস ও বাকি বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীকে ছাড়বে না।’’
অজিতের ছেলে শৌর্য উত্তরাখণ্ডে ভোটে নামার তোড়জোড় করছেন। তাঁর নামে রাজ্যের পথে পথে পোস্টার পড়েছে। শৌর্য নিজেও বিস্তর ঘাম ঝরাচ্ছেন। আর অজিত দিল্লিতে বসে ভোটের মন্ত্র দিচ্ছেন। তাঁর মতে, গণতন্ত্র দুর্বল বলে দেশও অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। আগামী কয়েক বছর ভারত ‘সফট পাওয়ার’ হওয়ার ঝুঁকি নিতে পারে না। দেশকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। তাই দশ বছর স্থায়ী, শক্তিশালী ও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম সরকার চাই। তাতে রাজনৈতিক, আর্থিক ও রণনৈতিক লক্ষ্যপূরণ করা সম্ভব। গত চার বছরে দেশের ‘জাতীয় ইচ্ছাশক্তি’ অনেকটাই বেড়েছে বলে তাঁর দাবি।
প্রায় এক ঘণ্টার বক্তৃতায় ডোভাল কোথাও নরেন্দ্র মোদীর নাম নেননি। কিন্তু ভিড়ে ঠাসা সভাগৃহে কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি, তিনি মোদীকেই আরও দশ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাইছেন। মোদীকে রুখতে বিরোধীরা যে একজোট হচ্ছে, পরোক্ষে সে প্রয়াসকেও একহাত নিলেন। বললেন, ‘‘নড়বড়ে সরকারে জাতীয় স্বার্থের থেকে বড় হয়ে যায় স্থানীয় রাজনৈতিক স্বার্থ। দুর্নীতি বাড়ে। নানা বিষয়ে আপস করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় দায়বদ্ধতার সঙ্গে আইনের শাসন প্রয়োজন। জনপ্রিয় সিদ্ধান্তের বদলে কঠোর সিদ্ধান্ত দরকার।
এ প্রসঙ্গে চিনের দৃষ্টান্তও টেনে আনেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। বলেন, সত্তরের দশকে আর্থিক দিক থেকে ভারত চিনের থেকে এগিয়ে ছিল। এখন চিন ভারতকে টেক্কা দিয়েছে। দেশের আর্থিক ব্যবস্থার মোড় ঘোরাতেও স্থায়ী, মজবুত সরকার প্রয়োজন।