Arsenic Pollution

আর্সেনিকের বিপদ বাংলা এবং বিহারেই সবচেয়ে বেশি! পরিবেশ আদালতে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের

ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক মিশে থাকার কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বাংলা এবং বিহারে। এক মামলার শুনানিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতে এ কথা জানিয়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৫
Share:

আর্সেনিক মিশ্রিত ভূগর্ভস্থ জলের প্রসঙ্গে জাতীয় পরিবেশ আদালতে রিপোর্ট দিল কেন্দ্র। — প্রতীকী চিত্র।

আর্সেনিক মিশ্রিত ভূগর্ভস্থ জলের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে। জাতীয় পরিবেশ আদালতে এ কথা জানাল কেন্দ্র। কেন্দ্রের বক্তব্য, কৃষিক্ষেত্রে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে এই আর্সেনিক মিশ্রিত দূষিত জলের কারণে চাষের জমিতে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। মূলত ভূগর্ভস্থ জলের থেকেই চাষের জমিতে আর্সেনিক প্রবেশ করে এবং এই আর্সেনিক ফলনে মিশে খাদ্যশৃঙ্খলে প্রভাব ফেলার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।

Advertisement

চাষের ক্ষেতে উৎপাদিত চালের উপর আর্সেনিক দূষণের প্রভাব সংক্রান্ত একটি মামলা চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালত (এনজিটি)-এ। ধানচাষের জন্য সাধারণত বেশি জলের প্রয়োজন হয়। তাই ধানের উপর ভূগর্ভস্থ জলে মিশে থাকা আর্সেনিকের প্রভাবও বেশি পড়ার সম্ভাবনার বিষয়ে মামলা হয়েছে আদালতে। ওই মামলায় কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল এনজিটি। সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পর ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর থেকে তথ্য সংগ্রহ করে কৃষি মন্ত্রক। এর পরে সেই তথ্য আদালতে জমা দেয় কেন্দ্র। রিপোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূগর্ভস্থ জলে মিশে থাকা আর্সেনিকের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ার আশঙ্কা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে।

জাতীয় পরিবেশ আদালতে কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, ধানের উপরেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, ধানচাষের জন্য জলের প্রয়োজন বেশি হয়। এর প্রভাব অনেকটা বড় অঞ্চলে ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা কেন্দ্রের। কারণ, আর্সেনিক দূষণ যে অঞ্চলে বেশি, সেখানকার শস্য অন্যত্রও সরবরাহ হয়। সে ক্ষেত্রে যেখানে মাটিতে আর্সেনিক দূষণের প্রভাব নেই, সেই অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাসেও এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

Advertisement

পিটিআই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিপোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, সাধারণত ফসলের মধ্যে আর্সেনিক ছড়ায় প্রথমে শিকড়ে, তার পরে কাণ্ডে এবং শেষে পাতায়। সে ক্ষেত্রে যেগুলি ফসলের মূলের অংশ কিংবা পাতার অংশ খাওয়া হয়, সেগুলিতে আর্সেনিক দূষণের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা বেশি। যেমন যে কোনও ধরনের শাক, বিট, মুলো ইত্যাদির উপর আর্সেনিক দূষণের প্রভাব বেশি পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে বলে মনে করছে কেন্দ্র। তুলনায় বেগুন, টম্যাটো (ফলের অংশ) বা শস্যের উপর আর্সেনিকের প্রভাব কম পড়ে বলেই জাতীয় পরিবেশ আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাটিল রাজ্যসভায় জানিয়েছেন, দেশের ২৫টি রাজ্যের ২৩০টি জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু অঞ্চলে আর্সেনিক বেশি মাত্রায় রয়েছে। তালিকায় বাংলা, বিহার ছাড়াও রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাত, অসম-সহ আরও বেশ কিছু রাজ্য।

জলশক্তি মন্ত্রকের ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, এ রাজ্যের কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিক বেশি মাত্রায় (প্রতি লিটার ০.০১ মিলিগ্রামের বেশি) রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement