হায়দরাবাদে চারমিনারের কাছে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড। ছবি: পিটিআই।
চারপাশ দাউ দাউ করে জ্বলছে। দিশাহারা সকলেই। কী ভাবে ওই আগুন থেকে বাঁচবেন, সেই চিন্তাই ঘুরছে। সেই আগুনে আটকে পড়েন এক মহিলা এবং তাঁর সন্তানেরা। সন্তানদের বাঁচাতে নিজের কোলের কাছে টেনে নেন তিনি। আগুনের গ্রাস যেন স্পর্শ করতে না পারে তাদের। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ওই অবস্থাতেই তিন জনে পুড়ে গেলেন! হায়দরাবাদের চারমিনারের কাছে অগ্নিকাণ্ডে এমনই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের কথা শোনা গেল এক প্রত্যক্ষদর্শীর মুখে!
রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ পুরনো হায়দরাবাদ শহরে চারমিনারের কাছে ‘গুলজ়ার হাউস’ নামের বহুতলে আগুন লাগে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট শিশু-সহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম অনেকেই। বেশ কয়েক জনকে নিরাপদে বাড়ির বাইরে বার করে আনা সম্ভব হয়েছে। ওই বহুতলের পাশেই তাঁর চুড়ির দোকান। চোখের সামনেই কয়েক জনকে আগুনে পুড়ে যেতে দেখেছেন। সেই ভয়াবহ দৃশ্যের কথা বলতে গিয়ে বার বার শিউরে উঠছেন জ়াহির।
প্রত্যক্ষদর্শী জ়াহিরের কথায়, ‘‘আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করি। বাইরেও চলে আসি। কিছু ক্ষণ পর আবার কোনওক্রমে ভেতরে প্রবেশ করি। আগুনের লেলিহান শিখা ক্রমশ চারপাশ গ্রাস করছিল। তখনই চোখ যায় ঘরের মধ্যে। দেখি এক মহিলা, তাঁর দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরে রয়েছেন। আমরা চিৎকার করি। কিন্তু তাঁদের বাঁচানো যায়নি।’’
হায়দরাবাদের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। কী কারণে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দমকলের প্রাথমিক ধারণা, ঘিঞ্জি ওই এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনে শর্ট সার্কিট হওয়ার ফলেই আগুন লাগে। বাড়িটির নীচে সোনার অলঙ্কারের বেশ কয়েকটি দোকান ছিল। দোকানদারদের পরিবারের সদস্যেরা থাকতেন বাড়িটির উপরতলায়। যখন আগুন লাগে, তখন সকলে ঘুমোচ্ছিলেন। ঘরের মধ্যে এসি চলছিল। জানলাও বন্ধ ছিল। ফলে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই বেশি হয়।
জ়াহিরের কথায়, ‘‘আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ভিতরে ঢোকা সহজ ছিল না। ধোঁয়ার কারণে আমরা কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। একটা দেওয়াল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করি। পরে আমরা ১৩ জনকে বাইরে বার করে আনতে পেরেছিলাম।’’