ভারতের গোপন সক্ষমতা কি জেনে ফেলল প্রতিপক্ষ? —ফাইল চিত্র।
ভারত-ফ্রান্স যৌথ উদ্যোগে তৈরি কালভারি (স্করপেন) ক্লাস সাবমেরিন ঠিক কতটা শক্তিশালী এবং তার বিশেষ সক্ষমতা কী কী— সে সব ফাঁস হয়ে গেল গোটা বিশ্বের সামনে। ২২ হাজার ৪০০ পাতার চূড়ান্ত গোপনীয় নথি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তুমুল হইচই শুরু হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, এই নথি ফাঁস হওয়া খুব খুব বড়সড় ধাক্কা ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জন্য। নৌসেনা অবশ্য বলছে, যে নথি ফাঁস হয়েছে, তাতে ভারতের প্রত্যক্ষ ক্ষতি খুব একটা হবে না। তবে প্রতিপক্ষ ভারতীয় নৌসেনার কিছু গোপন সক্ষমতার কথা জানতে পেরে যাবে।
দেখে নেওয়া যাক, ঠিক কী নথি ফাঁস হয়েছে:
এমনই নানা তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। স্করপেন তথা কালভারি ক্লাসের যে সাবমেরিন মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডকে তৈরি হচ্ছে, তাতে যে বিশেষ এবং অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি যোগ হয়েছে, সে সবও প্রকাশ হয়ে গিয়েছে ২২ হাজার ৪০০ পাতার ফাঁস হওয়া নথিতে।
এতে ভারতের কী ক্ষতি হবে?
নৌসেনা কর্তাদের একাংশ অবশ্য বলছেন, নথি ফাঁস হওয়া অস্বস্তিকর হলেও ‘এতে ভারতের কোনও ক্ষতি হবে না’:
ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএস-এর তৈরি স্করপেন সাবমেরিনের সক্ষমতা কেমন, তা মোটামুটি গোটা বিশ্বই জানে। অর্থাৎ স্করপেনের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি ভারতের বিভিন্ন প্রতিপক্ষের কাছে এত দিন অজানা ছিল, তা নয়। শুধু স্করপেনে নতুন যে সব বৈশিষ্ট্য যোগ করা হচ্ছে, নথি ফাঁস হওয়ার ফলে প্রতিপক্ষ সেগুলি জানতে পেরে গেল। নৌসেনা কর্তাদের একাংশ বলছেন, এতে প্রতিপক্ষ সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবে ঠিকই। কিন্তু তাতে ভারত সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা নয়।
আরও পড়ুন: অরুণাচলে বিপুল সংখ্যায় ব্রহ্মস, তিব্বত-ইউনান নিয়ে ঘোর উদ্বেগে চিন
নৌসেনা কর্তারা যা-ই বলুন, চূড়ান্ত গোপনীয় নথি এই ভাবে ফাঁস হয়ে যাওয়া যে মোটেই কাম্য নয়, তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ভালই বুঝতে পারছে। ৩৫০ কোটি ডলারে খরচ করে যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, সেই প্রকল্পের নথি সুরক্ষিত রাখার জন্য যথেষ্ট সাইবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হল না কেন, সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর জানিয়েছেন, হ্যাকার হানার জেরেই এই নথি ফাঁস। ভারত থেকে নয়, ফ্রান্স থেকেই এই নথি ফাঁস হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ইঙ্গিত। পর্রীকর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। নৌসেনা-প্রধানের কাছে রিপোর্টও চেয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে আরও খবর, নথি যে ফাঁস হয়ে গিয়েছে, তা ফরাসি সংস্থাটি ভারতে জানানোর প্রয়োজনও বোধ করেনি। অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর তা ভারতের নজরে এসেছে। ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএস-এর এই ‘দায়িত্বজ্ঞানহীনতা’কেও ভাল চোখে দেখছে না প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।