(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারতের উপর হতাশ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনাই এই হতাশার একমাত্র কারণ নয়। বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) আমেরিকার সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিয়ো। কেন ভারতের উপর ট্রাম্প এত হতাশ, তা ব্যাখ্যা করেছেন রুবিয়ো। ভারতকে আমেরিকার কৌশলগত বন্ধু বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
ভারত তেল কেনায় ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সুবিধা হচ্ছে রাশিয়ার, দাবি রুবিয়োর। তিনি বলেন, ‘‘দেখুন, বিশ্ব বাণিজ্যে ভারত আমাদের বন্ধু। কৌশলগত সঙ্গী। কিন্তু বিদেশনীতি অনুযায়ী, কারও সঙ্গে ১০০ শতাংশ সময়ে সমন্বয় রক্ষা করা যায় না।’’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে রুবিয়ো আরও বলেন, ‘‘ভারতে জ্বালানির চাহিদা প্রচুর। তারা খনিজ তেল, কয়লা, গ্যাস কেনে। প্রত্যেক দেশের মতো তাদেরও অর্থনীতি সুরক্ষিত ও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। তাই তারা রাশিয়া থেকে এই সমস্ত জিনিস কেনে। রাশিয়া অনেক কম দামে তেল বিক্রি করছে। ওদের উপর বিধিনিষেধের কারণে ওরা দাম কমিয়ে দিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, এটা রাশিয়াকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করছে। ফলে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে এটা নিশ্চিত ভাবে একটা বড় অস্বস্তির জায়গা। কিন্তু এটাই একমাত্র অস্বস্তি নয়।’’
রুবিয়ো জানিয়েছেন, সারা বিশ্বে আরও অনেক দেশ খনিজ তেল রফতানি করে থাকে। তা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে ভারত এত বেশি পরিমাণে তেল কিনছে, এতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হতাশ। এই কারণেই ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে রাশিয়া।
উল্লেখ্য, ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়তি ‘জরিমানা’ নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সূত্রের খবর, বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে ভারত খুব ধীরে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তা ট্রাম্প চাইছেন না। তিনি দ্রুত শুল্ক চূড়ান্ত করতে চান। তার ফলে একটা হতাশা ছিলই। তা ছাড়া, ব্রাজ়িল, রাশিয়া, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জোট ব্রিকস-এ থাকায় ভারতের উপর অসন্তুষ্ট ট্রাম্প। আগেই সেই অসন্তোষ প্রকাশ করে বাড়তি শুল্কের হুঁশিয়ারি তিনি দিয়ে রেখেছিলেন। এ ছাড়া, ভারতের কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের সেক্টরে আমেরিকাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের দাবি। ফলে নানা কারণে ট্রাম্পের হতাশা বাড়ছে।