Whatsapp in India

ভারত ছেড়ে চলে যাবে হোয়াট্‌সঅ্যাপ, তবু গোপনীয়তার সঙ্গে আপস নয়: হাই কোর্টে মেটার আইনজীবী

হোয়াট্‌সঅ্যাপে ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ পরিষেবা পাওয়া যায়। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় সরকার তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত যে নতুন নিয়ম চালু করেছে, তাতে এই পরিষেবা প্রশ্নের মুখে। তা নিয়েই চলছে মামলা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ভারত ছেড়ে চলে যাবে হোয়াট্‌সঅ্যাপ, তবু গোপনীয়তা সংক্রান্ত নিয়ম তারা লঙ্ঘন করবে না। দিল্লি হাই কোর্টে এমনটাই জানিয়ে দিলেন মেটার আইনজীবী। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষিত তথ্যপ্রযুক্তি নিয়মের মামলায় নিজেদের এই অবস্থান স্পষ্ট করেছে হোয়াট্‌সঅ্যাপ। তাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, গোপনীয়তার নিশ্চয়তার কারণেই হোয়াট্‌সঅ্যাপ ব্যবহার করেন মানুষ। তাই তার সঙ্গে কোনও আপস করা যাবে না।

Advertisement

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইনফরমেশন টেকনোলজি (ইন্টারমিডিয়েটরি গাইডলাইনস অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) রুল, ২০২১ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। তাতে বলা হয়েছিল, টুইটার (বর্তমানে এক্স), ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াট্‌সঅ্যাপের মতো সমাজমাধ্যমগুলিকে নতুন নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে চ্যাট অনুসরণ করে কোনও ভাইরাল তথ্যের উৎস সন্ধান করতে হবে।

হোয়াট্‌সঅ্যাপে ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’ পরিষেবা পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে যে কোনও চ্যাট সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বাইরের কেউ সেই কথোপকথনের নাগাল পান না। এমনকি, হোয়াট্‌সঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাও সেই চ্যাট পড়তে পারে না। কেন্দ্রের ঘোষিত নিয়মে প্রয়োজন হলে হোয়াট্‌সঅ্যাপের এই গোপনীয়তার বেড়া ভাঙার কথাও বলা হয়েছিল। যাতে রাজি হননি কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এই সংক্রান্ত শুনানিতে দিল্লি হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মনমোহন এবং বিচারপতি মনমীৎ প্রীতম সিংহ অরোরার বেঞ্চে হোয়াট্‌সঅ্যাপের আইনজীবী জানান, যে পদ্ধতিতে তাঁরা গোপনীয়তা রক্ষা করেন, তা ভাঙা সম্ভব নয়। সেটা করতে গেলে মেসেজের একটি দীর্ঘ তালিকা দীর্ঘ সময়ের জন্য রেখে দিতে হবে। কারণ কখন কোন মেসেজ সংক্রান্ত তথ্য জানার প্রয়োজন হবে, তা আগে থেকে নির্ণয় করা যাবে না। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মেসেজ বছরের পর বছর ধরে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। যা অসম্ভব। তাই এই নিয়ম হোয়াট্‌সঅ্যাপের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হলে তারা ভারত ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হবে। পৃথিবীর অন্য কোনও দেশেও হোয়াট্‌সঅ্যাপ সংক্রান্ত এমন কোনও নিয়ম চালু করা হয়নি বলে জানান তাদের আইনজীবী।

এই মামলাতেই কেন্দ্রের আইনজীবীর যুক্তি, হোয়াট্‌সঅ্যাপকে হাতিয়ার করে অনেক সময়েই আপত্তিকর বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় সমাজমাধ্যমে। যা জনমানসের পক্ষে ক্ষতিকর। এমনকি, ওই ধরনের বার্তাগুলি কখনও কখনও সাম্প্রদায়িক অশান্তির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। তাই ২০২১ সালের ওই নিয়মটি চালু করা প্রয়োজন ছিল।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, সাধারণ মানুষের গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা কখনওই নিরঙ্কুশ নয়। দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন। আগামী ১৪ অগস্ট এই মামলাটি আবার দিল্লি হাই কোর্টে শুনানির জন্য উঠবে। ২০২১ সালে কেন্দ্রের আইটি নিয়ম সংক্রান্ত ঘোষণার বিভিন্ন দিককে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে এখনও পর্যন্ত যে ক’টি মামলা হয়েছে, সব একত্রে ১৪ অগস্ট শুনবে দিল্লির উচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলাগুলি গত ২২ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টে স্থানান্তরিত করে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন