প্রতীকী ছবি।
সরকারি ছুটি থেকে ছেলেধরা, হরেক গুজবে হাজার বিপত্তি। এই অবস্থায় গুজবের বিপদ ঠেকাতে ভারতে এ বার ছবি, মেসেজ, অডিয়ো বার্তা ছড়ানোর (ফরোয়ার্ড) উপরে লাগাম টানতে চলেছে হোয়াটসঅ্যাপ। নিজেদের সংস্থার ব্লগে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে তারা। বলেছে, নতুন ব্যবস্থায় কেউ একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি লোককে কোনও কিছু ফরোয়ার্ড করতে পারবেন না। ‘কুইক ফরোয়ার্ড’ ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই বিষয়টি আপাতত পরীক্ষামূলক স্তরে রয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপে বার্তা ছড়ানোর ক্ষেত্রে কোনও রাশ টানা হবে কি না, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
সম্প্রতি দেশে ছেলেধরার গুজবের জেরে গণপিটুনি ও মৃত্যুর বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই গুজব ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুককে নিশানা করেছে কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে হোয়াটসঅ্যাপের কাছে দ্বিতীয় দফার নোটিস গিয়েছে বৃহস্পতিবার। তার পরেই এই ব্লগের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, এ দেশে গ্রাহক তাদের প্রায় ২০ কোটি। সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, অন্য দেশের তুলনায় ভারতীয়েরা বেশি ছবি ও মেসেজ ফরোয়ার্ড করেন।
প্রশ্ন উঠেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আইটি সেলগুলি তা হলে প্রচার চালাবে কী ভাবে? সে-ক্ষেত্রেও কি বিধিনিষেধ আরোপিত হবে? সাইবার বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, আইটি সেল থেকে মূলত হোয়াটসঅ্যাপে ‘ব্রডকাস্ট লিস্ট’ বা গ্রুপ তৈরি খবর ছড়ানো হয়। ফলে এ ক্ষেত্রে লাগাম না-ও প়ড়তে পারে।
সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, গুজবের জেরে গোলমাল বা গণপিটুনির ঘটনা ঘটলে দায় এড়াতে পারে না হোয়াটসঅ্যাপ। আইন অনুযায়ী যে-মাধ্যমকে ব্যবহার করে গুজব ছড়ানো হয়, তাকে বলা যেতে পারে প্ররোচনাকারী। কেন্দ্রের নোটিসে এই বিষয়টির উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সংস্থা এ ক্ষেত্রে নীরব দর্শকের ভূমিকা নিতে পারে না। আগুপিছু না-ভেবে মেসেজ ছ়়ড়ানো রুখতে ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হয়েছে পুলিশও। তারাও বলছে, এ ভাবে মেসেজ ছড়ালে যে-কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্ররোচনার মামলা ঠুকে দেওয়া হতে পারে।
তবে সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের মতে, শুধু বার্তা ফরোয়ার্ড বন্ধ করলেই হবে না। কোনও ঘটনা ঘ়টলে তদন্তকারীরা যাতে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে সাহায্য পান, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশে এই ধরনের আইন আছে।