বক্তৃতায় রাফাল উড়তেই তালির গর্জন সংসদে

প্রায় এক ঘণ্টা বক্তৃতায় হঠাৎই একটি শব্দ বেরোল রাষ্ট্রপতির মুখ থেকে— রাফাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১৬
Share:

সৌজন্য: আডবানীর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।—ছবি পিটিআই।

বাজেট অধিবেশন শুরুর দিন। যৌথ সভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সামনের সারিতে প্রধানমন্ত্রী, পাশে রাজনাথ সিংহ, গুলাম নবি আজাদ। তার পরেই মনমোহন সিংহ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, দেবগৌড়া। তাঁদের ঠিক পাশেই প্রথম সারিতে মল্লিকার্জুন খড়্গেকে পাশে নিয়ে রাহুল গাঁধী। কিন্তু তাঁকে প্রায় ঘিরে সরকারের আধ ডজন মন্ত্রী। স্মৃতি ইরানি, প্রকাশ জাভড়েকর, রাধামোহন সিংহ, থাওরচন্দ্র গহলৌত, হর্ষবর্ধন।

Advertisement

প্রায় এক ঘণ্টা বক্তৃতায় হঠাৎই একটি শব্দ বেরোল রাষ্ট্রপতির মুখ থেকে— রাফাল। বললেন, ‘‘অনেক দশক পর বায়ুসেনা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে নতুন প্রজন্মের আধুনিক যুদ্ধবিমান রাফাল সামিল করে নিজেদের শক্তি আরও বাড়াবে।’’ আর নিমেষের মধ্যে তালির গর্জন শুরু হল।

ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল হলে সে তালি, টেবিল চাপড়ানো যেন থামার নাম নেই। লোকসভা আর রাজ্যসভা মিলিয়ে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা এখনও তিনশোরও বেশি। গোটা বিজেপি শিবিরের নিরন্তর সেই তালির লক্ষ্য যে রাহুল, বুঝতে অসুবিধা হল না কারও। তাঁর দিকে তাকিয়েই বেশির ভাগ বিজেপি সাংসদ গর্জন করলেন। চুপ থাকলেন রাষ্ট্রপতিও।

Advertisement

সদ্য গত কালই রাফাল নিয়ে পত্রযুদ্ধ হয়েছে রাহুল আর প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের। সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত এ দিনই গোয়ায় পর্রীকরের সঙ্গে দেখা করেছেন। তার পরে পর্রীকর দিল্লি এসেছেন চিকিৎসার জন্য।

অমেঠীতে রাহুলকে টক্কর দেওয়া স্মৃতি ইরানি আজ সকালেই একটি দীর্ঘ ব্লগ লিখে ফেলেছেন রাহুলের পরিবারতন্ত্র নিয়ে খোঁচা দিয়ে তাঁকে ‘মিথ্যেবাদী’ বলে। তার পরেই যে ভাবে গোটা বিজেপি আজ রাফাল নিয়ে তালির গর্জন তুললেন, সেটিও যে চিত্রনাট্য, বুঝল কংগ্রেসে। কারণ, বক্তৃতা রাষ্ট্রপতির হলেও তা তৈরি মোদীর। রাহুলও মুচকি হাসলেন। পরে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করলেন। সংসদে ফের রাফাল নিয়ে সরব হতে বললেন।

কয়েক মাস ধরেই রাহুল অভিযোগ করে আসছেন, মোদী সরকার নতুন কিছু করেননি। আজ এক ঘণ্টার বেশি বক্তৃতায় গত সাড়ে চার বছরের খতিয়ান মেলে ধরে সরকার যেন রাহুলকেই বার্তা দিতে চাইলেন। তা সে কৃষকদের সঙ্কটের সমাধান খোঁজার রাস্তাই হোক বা গরিব মানুষের উত্থানের চেষ্টা। স্বরোজগার দেওয়ার পথ বলা বা মহিলা-যুবকদের জন্য প্রকল্প। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা মেলে ধরল মোদীরই রাজনীতি।

কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা প্রশ্ন তুললেন— এত কথা হল, কিন্তু ২০১৪ সালে দেওয়া প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল? রোজগার, স্মার্ট সিটি, দারিদ্র মোচন, দুর্নীতি দূর, মেক ইন ইন্ডিয়া— কোথায় সব? রাফাল উঠল, কিন্তু তাতে দুর্নীতি? প্রযুক্তি হস্তান্তর কী হল? সরকারের তো টাকাই নেই, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে নজর তাদের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন