National news

কাকে বেশি এনজয় করলেন, গণধর্ষিতাকে প্রশ্ন পুলিশের!

গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। অভিযুক্ত চার জনকে ডেকে আনা হয়েছে। একে একে সনাক্ত করছেন নির্যাতিতা। হঠাত্ই এক পুলিশকর্মীর প্রশ্ন, ‘এদের মধ্যে আপনাকে সব থেকে আনন্দ দিয়েছিল কে?’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ১৭:২০
Share:

সাংবাদিকদের অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছেন নির্যাতিতা এবং তাঁর স্বামী।

গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। অভিযুক্ত চার জনকে ডেকে আনা হয়েছে। একে একে সনাক্ত করছেন নির্যাতিতা। হঠাত্ই এক পুলিশকর্মীর প্রশ্ন, ‘এদের মধ্যে আপনাকে সব থেকে আনন্দ দিয়েছিল কে?’ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। বলতে ইচ্ছে করছিল, ধরণী দ্বিধা হও। অপমানে, লাঞ্ছনায়, ভয়ে, বিস্ময়ে, এবং পুলিশের মনোভাবটা বুঝতে পেরে শেষ পর্যন্ত অসহায়ের মতো তুলে নিয়েছিলেন মামলা। সব কিছু ধামাচাপা পড়েই গিয়েছিল। যেমন যায় অনেক অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচইয়ের জেরে এবং তার পর কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেই মামলার খাতা ফের নতুন করে খুলল। তদন্ত শুরু হল পুলিশের বিরুদ্ধেও। আর এই নতুন করে শুরু হওয়ার পিছনে যাঁর ভূমিকা সবচেয়ে বেশি, তিনি কেরলের ডাবিং শিল্পী তথা সমাজকর্মী ভাগ্যলক্ষ্মী।

Advertisement

ঘটনাটা কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, চলতি বছরের গোড়ার দিকে কর্মসূত্রে বেশ কয়েকদিনের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। তারই মধ্যে এক দিন বাড়িতে এসে হাজির হয় স্বামীর চার বন্ধু। চার জনই তাঁর পূর্ব পরিচিত। বাড়িতে ঢুকেই তারা বলে যে তাঁর স্বামী অসুস্থ। অবস্থা গুরুতর। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখনই তাঁকে যেতে হবে। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, সেই মুহূর্তে ওই চার জনের উপর বিশ্বাস করা ছাড়া তাঁর আর কোনও উপায় ছিল না। এক বুক উদ্বেগ, ভয় নিয়ে ওদের গাড়িতেই তিনি হাসপাতালের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছিলেন। ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি কী ঘটতে যাচ্ছে! গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের বাইরে এক নির্জন এলাকায়। গাড়ি দাঁড় করিয়ে তার ভিতরেই পর পর চার জনে ধর্ষণ করে তাঁকে। অভিযুক্ত চার জনের মধ্যে এক জন আবার কেরলের সক্রিয় রাজনীতিক।

প্রথমে লজ্জায়, ভয়ে এই ঘটনা কাউকে জানাতে পারেননি তিনি। স্বামী ফিরে আসার মাস তিনেক পরে পুরো ঘটনা জানালে স্বামীর জোরাজুরিতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে সেই নিদারুণ অভিজ্ঞতা। অভিযোগ লিপিবদ্ধ করার পর থানায় হাজির করা হয়েছিল চার অভিযুক্তকেই। সনাক্তকরণের সময় এক পুলিশ কর্মী তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এদের মধ্যে কে আপনাকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিতে পেরেছেন?’ অসহায় লাগছিল ভীষণ। ঘেন্না লাগছিল আশপাশের সব কিছুতে। এমনিতেই অভিযোগ জানাতে বেশ দেরি করে ফেলেছেন। তার উপর অভিযুক্তদের একজন সক্রিয় রাজনীতিক। পুলিশ আসলে কী চাইছে বুঝতে অসুবিধে হচ্ছিল না। তাই ওই পুলিশি অপমান হজম করে নিয়ে শেষমেশ মামলাই তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

নগ্ন হাঁটানোর পর গণধর্ষণ, সেই পাকিস্তানি আজ র‌্যাম্পের নায়িকা

আজ, বৃহস্পতিবার তিরুঅনন্তপুরমে সাংবাদিক সম্মেলন করে দুই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন নির্যাতিতা। ধর্ষকদের শাস্তি তো চানই, একই সঙ্গে শাস্তি চান পুলিশেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন