বিজেপি ষড়যন্ত্র করে দাদরি-কাণ্ডে নিহত মহম্মদ আখলাকের পরিবারের উপর চাপ তৈরি করছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের কাছে এই অভিযোগ জানালেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট। গত সপ্তাহেই উত্তরপ্রদেশের আদালত আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে গো-হত্যা মামলায় এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিপিএমের পলিটব্যুরো নেত্রীর দাবি, কী পরিস্থিতিতে এই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল, তা খতিয়ে দেখা হোক।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে দাদরিতে আখলাকের বাড়িতে গোমাংস রাখার অভিযোগে তাঁকে গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয়। আদৌ তা গোমাংস ছিল কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। এ বার গো-হত্যার অভিযোগে আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশের পর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, আখলাককে বিনা বিচারে মেরে ফেলার পরে তাঁর পরিবারকে কেন হেনস্থা করা হচ্ছে! উত্তরপ্রদেশের ভোটের দিকে তাকিয়েই এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে বলেই সমালোচনা শুরু হয়।
আদালতের ওই নির্দেশের পরেই অখিলেশের সঙ্গে কথা বলেন বৃন্দা। তিনি অখিলেশকে বোঝান, যাঁরা আখলাকের খুনে জড়িত, তাঁরা পরিবারের উপর চাপ তৈরি করছে। কারণ পরিবারের সদস্যরাই খুনের ঘটনার সাক্ষী। পরিবারের উপর খুনের মামলা তুলে নেওয়ার জন্যও চাপ তৈরি হচ্ছে। বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বয়ান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, তাঁরা আখলাকের পরিবারকে এই ভাবে নিশানা করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত। সেই কারণেই তাঁদের গো-হত্যার মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরাও অভিযুক্তদের মদত দিচ্ছে।
অখিলেশ বৃন্দাকে প্রতিশ্রুতি দেন, আখলাকের পরিবার যাতে সুবিচার পায়, সে দিকে নজর দেবেন তিনি। কোন পরিস্থিতিতে আখলাকের পরিবারের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল, তা-ও তিনি দেখবেন। এর পরে অখিলেশকে চিঠি লিখে বৃন্দা জানান, উত্তরপ্রদেশের পুলিশ আদালতে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। তদন্তে উঠে এসেছে, আখলাকের বিরুদ্ধে গো-হত্যার অভিযোগ সাজানো হয়েছিল। তা-ও আদালতকে জানানো হয়নি। এ বিষয়ে যে আর তদন্তের প্রয়োজন নেই, তা-ও আদালতে বলা হয়নি। অভিযুক্তরাই আইনের অপপ্রয়োগ করেছে। পুলিশ সে বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক ছিল না।
বৃন্দা কারাটের যুক্তি, বাড়ির এক জনের মৃত্যুর পর শোকসন্তপ্ত পরিবারের এ ভাবে হেনস্থা হওয়াটা গোটা দেশের লজ্জা। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের পদস্থ লোকেরাই খুন, গণপিটুনিকে সঠিক বলে প্রমাণিত করার চেষ্টা করছে। গো-হত্যার মিথ্যে অভিযোগ তুলে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।