Rahul Gandhi

ঠান্ডা লাগে না রাহুল গান্ধীর? হাড়কাঁপানো দিল্লিতে হাফ হাতা টি-শার্টে ঘোরার রহস্যটা কী!

বিজেপি থেকে সাধারণ মানুষ— সকলেরই প্রশ্ন, রাহুলের কি ঠান্ডা লাগে না? রাজনৈতিক ভাবেই এই প্রশ্নের মোকাবিলা করেছেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। কিন্তু বিজ্ঞান অন্য কথা বলছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ২২:০২
Share:

সহযাত্রীরা যখন জ্যাকেট, সোয়েটারে জবুথবু, তখনও রাহুলের পরনে সেই টি-শার্ট আর জিনস। — ফাইল ছবি।

কাঁপছে রাজধানী। ঠান্ডায় নৈনিতালকেও হার মানিয়েছে। সেই দিল্লিতে কেবল একটা টি-শার্ট আর জিন্‌স পরে চষে বেড়াচ্ছেন রাহুল গান্ধী। এত দিন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ করছিলেন। ডিসেম্বরে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের হাড়কাঁপানো ঠান্ডাতেও তাঁর পোশাকে কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি। সহযাত্রীরা যখন জ্যাকেট, সোয়েটারে জবুথবু, তখনও রাহুলের পরনে সেই টি-শার্ট আর জিনস। বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। বিজেপি থেকে সাধারণ মানুষ— সকলেরই প্রশ্ন, রাহুলের কি ঠান্ডা লাগে না? রাজনৈতিক ভাবেই এই প্রশ্নের মোকাবিলা করেছেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। কিন্তু বিজ্ঞান অন্য কথা বলছে। বলছে, সকলের না হলেও অনেকেরই ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা অনেক বেশি। তার কারণও রয়েছে।

Advertisement

রাহুল গান্ধীকে সংবাদিকেরা প্রশ্ন করেছিলেন, তাঁর ঠান্ডা কেন লাগছে না? পরে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘ওঁরা আমায় জিজ্ঞেস করেন, কেন আমার ঠান্ডা লাগছে না। ওঁরা কৃষক, শ্রমিক, গরিব বাচ্চাদের তো এই প্রশ্ন করেন না!’’ নিজের জবাবে রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছিলেন রাহুল। তবে বিজ্ঞান বলছে, চরম ঠান্ডাতেও অনেকের শীত করে না। প্রবল গরমেও আবার অনেকের তেমন গরম লাগে না। জিনগত সঙ্কেতের পরিবর্তনই এর কারণ। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে কিছু গ্রাহক কোষ রয়েছে। সেই গ্রাহক কোষই বলে দেয় যে, উষ্ণতার পরিবর্তনে কেমন করে মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়া জানাবে। ২০২১ সালের একটি গবেষণা বলছে, জিনগত মিউটেশনের কারণে গ্রাহক কোষের কাজেও পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে কোনও ব্যক্তির গরম এবং ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টু ডে জানাচ্ছে, ‘আমেরিকান জার্নাল অব হিউম্যান জেনেটিকস’-এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ১৫০ কোটি মানুষ চরম তাপমাত্রা সহ্য করতে পারেন। কারণ তাঁদের কঙ্কাল পেশির ফাইবারে এক ধরনের প্রোটিন থাকে না। সেই প্রোটিনটির নাম হল এ-অ্যাকটিনিন-৩। স্লো-টুইচ ফাইবার এবং ফাস্ট-টুইচ ফাইবার নিয়ে তৈরি হয় কঙ্কাল পেশি। এই দু’ধরনের ফাইবারের কারণেই পেশি সঞ্চালন হয়। সহ্যশক্তি এবং এনার্জির তৈরি করে স্লো টুইচ পেশি। ফাস্ট-টুইচ ফাইবারের কারণে আচমকা প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয় শরীরে। ক্রীড়াবিদরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে তাদের ক্ষেত্রে কাজে আসে এই শক্তি।

Advertisement

এক গবেষক জানিয়েছেন, যাঁদের শরীরে এ-অ্যাকটিনিন-৩ প্রোটিন কম থাকে, তাঁরা অতিরিক্ত ঠান্ডাও অনায়াসে সহ্য করতে পারেন। ঠান্ডা জলে ডুবলেও তাই তাঁদের ঠান্ডা লাগে না। চিকিৎসক প্রভাত রঞ্জন সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের মস্তিষ্কে তাপ নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র রয়েছে। সেটিই শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। আর শরীরে মৌলিক বিপাকক্রিয়ার উপর নির্ভর করে ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতা। শরীরে তাপমাত্রা তৈরি এবং চরম তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতার জন্য দায়ী থাইরক্সিন হরমোন।’’ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বিবর্তনের ফলে কোনও কোনও মানুষের তাপমাত্রা সহ্য করার ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। কেউ আবার অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠেছেন। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন