জমা কেন বেশি, প্রশ্নের মুখে ১৮ লক্ষ

একই ব্যক্তি। দু’ডজন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। সব অ্যাকাউন্টেই পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোট জমা পড়েছে। প্রতিটিতেই জমার অঙ্কটা ২ লক্ষ টাকার বেশি, কিন্তু কোথাও তা আড়াই লক্ষ ছাড়ায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

একই ব্যক্তি। দু’ডজন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। সব অ্যাকাউন্টেই পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোট জমা পড়েছে। প্রতিটিতেই জমার অঙ্কটা ২ লক্ষ টাকার বেশি, কিন্তু কোথাও তা আড়াই লক্ষ ছাড়ায়নি।

Advertisement

অঙ্ক কষেই আলাদা আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পুরনো নোট জমা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু আয়ের সঙ্গে জমা টাকার অঙ্ক না মেলায় আয়কর দফতরের প্রশ্নের মুখে ১৮ লক্ষ অ্যকাউন্ট মালিক। কেন্দ্রীয় রাজস্বসচিব হসমুখ অধিয়া জানাচ্ছেন, এটা প্রথম পর্যায়। মোদী সরকারের এই পদক্ষেপে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের হেনস্থা করার সুযোগ তৈরি হবে বলে আশঙ্কা বণিকসভা ফিকির।

নোট বাতিলের পরে মোদী সরকার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট নিশ্চিন্তে ব্যাঙ্কে জমা করুন। আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমায় চিন্তার কিছু নেই। এতেই অনেকে একাধিক অ্যাকাউন্টে ভাগ করে করে টাকা জমা করেছেন। যাতে কোনওটিতেই জমার অঙ্কটা আড়াই লক্ষ টাকা না ছাড়ায়। কিন্তু আয়কর দফতরের নজর তাতে এড়ানো যায়নি। আয়কর অফিসাররা প্যান নম্বর, নাম বা ঠিকানা মিলিয়ে দেখে এই সব অ্যাকাউন্টের মালিকদের চিহ্নিত করেছেন। ওই ব্যক্তিদের মোট জমা টাকার পরিমাণ আয়ের সঙ্গে খাপ না খেলে তাঁদের ই-মেল বা এসএমএস করা হয়েছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে, কেন নগদে জমা টাকার অঙ্ক তাঁদের ঘোষিত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

Advertisement

ব্যাঙ্কে পুরনো নোট

৯ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬

জমার অঙ্ক (টাকায়) অ্যাকাউন্ট সংখ্যা মোট জমা (লক্ষ কোটি টাকায়)

• ২ লক্ষের বেশি ১.১০৪৮ কোটি ১০.৩৮

• ২ থেকে ৮০ লক্ষ ১.০৯ কোটি ৫.৪৮

• ৮০ লক্ষের বেশি ১.৪৮ লক্ষ ৪.৮৯

নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয় গত ৮ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে। পুরনো নোট ব্যাঙ্কে জমা করার জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব দফতরের হিসেব বলছে, এই সময়ের মধ্যে ৮০ লক্ষ টাকার উপরে টাকা জমা পড়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা সওয়া দু’কোটির বেশি। কেন্দ্রীয় রাজস্বসচিব হসমুখ অধিয়া জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে ১৮ লক্ষ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁদের আয়ের সঙ্গে জমা টাকার পরিমাণ খাপ খাচ্ছে না। তাঁদেরই ই-মেল, এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। এর পর গত কয়েক বছরের আয় দেখে আরও সন্দেহজনক জমা চিহ্নিত করা হবে।

এর ফলে আয়কর অফিসারদের হেনস্থার মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে ব্যবসায়ী ও শিল্পমহলে। ফিকি-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে আলোচনাতেও আজ এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন শিল্পপতিরা। রাজস্বসচিব হসমুখের বক্তব্য, ‘‘ই-মেল বা এসএমএস পেলেই তাঁকে আয়করের নোটিস ভাবার কোনও কারণ নেই। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে তখনই নোটিস পাঠানো হবে।’’

হেনস্থার আশঙ্কা দূর করতে রাজস্বসচিবের আশ্বাস, আয়কর অফিসারদের ক্ষমতা বাড়ছে না। ব্যক্তিগত ভাবে তাঁদের কেউ যাতে কাউকে হেনস্থা করার সুযোগ না পান, সেই জন্যই ই-মেল, এসএমএস-এ প্রশ্ন করা হয়েছে। হসমুখের বক্তব্য, ‘‘কোনও আয়কর অফিসার হেনস্থা করলে সরাসরি আমাকে ই-মেল করুন, সিবিআইকে জানান, সাংসদ-মন্ত্রীদের নালিশ করুন। এখনও পর্যন্ত কোনও হেনস্থার অভিযোগ আসেনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement