নোটিস না-দিয়ে কোনও ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হবে না! সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিল কমিশন। —প্রতীকী চিত্র।
নোটিস না-দিয়ে কোনও ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হবে না বিহারে। শনিবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে আশ্বস্ত করল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের হলফনামায় বলা হয়েছে, সে রাজ্যের ভোটার তালিকায় থাকা ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আগে নোটিস ধরানো হবে। সেখানে উল্লেখ থাকবে, কী কারণে ওই নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। হলফনামায় এ-ও বলা হয়েছে যে, সাধারণ ন্যায়বিচারের নীতি মেনেই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ গিয়েছে এমন কেউ কমিশনকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারবেন এবং নিজের দাবির সপক্ষে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে পারবেন।
চলতি বছরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে সে রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (এসআইআর) চালাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। গত ১ অগস্ট একটি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে তারা। ওই খসড়া তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এই নিয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত ৬ অগস্টের শুনানিতে অন্যতম মামলাকারী পক্ষ অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর)-এর তরফে অভিযোগ করা হয় যে, ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম স্বচ্ছতার সঙ্গে বাদ দেওয়া হয়নি। কী কারণে ওই ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হল, তা-ও স্পষ্ট করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন এডিআর-এর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। শীর্ষ আদালতে প্রশান্ত জানান, খসড়া ভোটার তালিকার পূর্ণাঙ্গ প্রতিলিপি সব রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়নি। বুথ স্তরের নির্বাচনী আধিকারিক বা বিএলও-রা যথাযথ নথি যাচাই করার আগেই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়েছেন বলে দাবি করা হয়। তার পরেই এই বিষয়ে কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা চায় বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞা এবং বিচারপতি এনকে সিংহের বেঞ্চ। আগামী ১২ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আদালতে ওঠা অভিযোগের জবাব দিয়ে কমিশন হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, যাতে বৈধ কোনও ভোটারের নাম বাদ না-যায়, তার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ করা হয়েছে। ১০ দফায় নথি যাচাইয়ের কাজ হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলিকেও শামিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। তা ছাড়া মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ খারিজ করে কমিশন জানিয়েছে, বিএলও-রা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করেছেন। যাঁদের কাছ থেকে ফর্ম পাওয়া যায়নি, তাঁদের নাম পাঠানো হয়েছে বুথ স্তরের এজেন্ট এবং স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে। ২০ জুলাই নামের তালিকা দেওয়ার পরে ১ অগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয় বলে জানিয়েছে কমিশন। তালিকায় সংযোজন-বিয়োজনের পর রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের কাছে নতুন তথ্য ফের তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।