শীতকালীন অধিবেশন ডাকতে এত দেরি হল কেন? জবাব হল— বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে শীত এখনও সে ভাবে পড়েনি। তাই অধিবেশন ডাকতে দেরি হয়েছে!
দিল্লির কুয়াশা ভরা সকালে আজ এই তত্ত্বটি হাজির করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। অধিবেশনের প্রথম দিনে সংসদে পা রেখেই বললেন, ‘‘সাধারণত দীপাবলির সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডার আবহাওয়া শুরু হয়। কিন্তু এ বার বিশ্ব উষ্ণায়ন আর আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা অতটা পড়েনি। কিন্তু সংসদের শীতকালীন অধিবেশন আজই শুরু হচ্ছে। গড়াবে আগামী বছর পর্যন্ত।’’ প্রধানমন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে বিজেপি নেতারাও দিনভর বলে চললেন, শীত পড়েনি বলেই অধিবেশন শুরু করতে
দেরি হল। এক বিরোধী নেতা জানাচ্ছেন, আজ এক বৈঠকে স্পিকার সুমিত্রা মহাজনও যুক্তি দিয়েছেন— শীত দেরিতে পড়াতেই অধিবেশন পিছোতে হয়েছে।
অথচ কাল রাত পর্যন্ত বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা প্রকাশ্যেই বলেছেন, গুজরাত ভোটের জন্যই অধিবেশন দেরিতে শুরু করা হয়েছে। অতীতেও এমন নজির রয়েছে। গুজরাতে প্রচারে রাহুল গাঁধীরা তাই বলে এসেছেন, আসলে অমিত-পুত্র জয় শাহের ব্যবসাপত্র বা রাফাল দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন এড়াতেই অধিবেশন পিছিয়েছে সরকার। কিন্তু এ দিন এক সম্পূর্ণ নতুন তত্ত্ব হাজির করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধী দলের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘যদি এমন হয়, তা হলে তো এখন আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে কথা বলে সংসদ ডাকা হবে। বৃষ্টি না পড়লে বর্ষাকালীন অধিবেশনও ডাকা যাবে না।’’
আরও পড়ুন: কীসের ‘অবসর’, জল্পনা ওড়াল দলই
অধিবেশন কেন দেরিতে শুরু হল, তা নিয়ে সামনের সপ্তাহে হল্লা করার তোড়জোড় করছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য— যে অজুহাতই দেওয়া হোক না কেন, আসলে ভোটের মুখে অস্বস্তিকর প্রশ্নের ভয়েই অধিবেশন পিছিয়েছে সরকার।
বিজেপি অবশ্য বলছে, সোমবার গুজরাত আর হিমাচলের ফল প্রকাশের পর বিরোধীদের আর সেই মুখ থাকবে না। গত কাল বুথ ফেরত সব সমীক্ষাই বলেছে, দুটি রাজ্যেই জিতছে বিজেপি। আজ লোকসভায় নরেন্দ্র মোদী যখন প্রবেশ করেন, তালি বাজিয়ে তাঁকে স্বাগত জানায় বিজেপি শিবির। অন্য বারের মতো বিরোধীদের কাছে গিয়ে আর সৌজন্য দেখাননি মোদী। নিজের আসনে দাঁড়িয়েই ‘নমস্কার’ ছুঁড়ে দিয়েছেন। অথচ সুষমা স্বরাজের মতো নেত্রীরা বিরোধী বেঞ্চে গিয়ে কুশল বিনিময় করে এসেছেন।