ভোট-প্রচারে অমিত শাহ বলতেন, শপথের দিনই অধ্যাদেশ করে বন্ধ করে দেওয়া হবে রাজ্যের সব কসাইখানা। যোগী আদিত্যনাথের শপথের তিন দিন হল, আনুষ্ঠানিক ফরমান জারি হয়নি। কিন্তু বন্ধ হচ্ছে একের পর এক কসাইখানা। ইলাহাবাদের পরে এ বার গাজিয়াবাদে।
বিজেপি সভাপতি মুখে বলতেন সব (বৈধ ও অবৈধ) কসাইখানা বন্ধের কথা। বিজেপির ইস্তাহারে যদিও বলা রয়েছে, বন্ধ করা হবে শুধু অবৈধ ও যান্ত্রিক কসাইখানাগুলি। আর গরিব কৃষকের গবাদি পশুর স্বাস্থ্যবিমা হবে। সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অবৈধ ও যান্ত্রিক কসাইখানার তালিকা পাঠিয়েছে। রাজ্যে প্রায় তিন ডজন কসাইখানার সরকারি অনুমোদন রয়েছে। বেশির ভাগই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে। তার মধ্যে বেশির ভাগ যান্ত্রিক কসাইখানার অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছর।
যোগী সরকারকে এ বার স্থির করতে হবে, অধ্যাদেশ করে মেয়াদের আগেই অনুমোদন রদ হবে, নাকি মেয়াদ শেষে নবীকরণ বন্ধ করা হবে।
আরও পড়ুন: নগদ লেনদেনে ঊর্ধ্বসীমা কমছে ২ লক্ষে, রিটার্ন জমায় আবশ্যিক আধার
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে সরকারি কোনও ফরমান জারির আগেই প্রশাসন কোথাও কোথাও জোর করে কসাখানা বন্ধ করতে শুরু করায়। অনেকে আবার ভয়ে নিজেরাই বন্ধ করে দিচ্ছে। মোটামুটি হিসেব বলছে, উত্তরপ্রদেশে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার মাংসের ব্যবসা হয়ে থাকে বছরে। অবৈধ কসাইখানায় কাজ করেন প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। এঁদের বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা করার কথাও ভাবতে হবে মুখ্যমন্ত্রী যোগীকে। ভোটের সময় কসাইখানা বন্ধের প্রচারের মাধ্যমেই বিজেপি মেরুকরণের হাওয়াকে উস্কে দিয়েছিল। কারণ, কসাইখানাগুলিতে সংখ্যালঘুরাই জড়িত। আর হিন্দুদের অভিযোগ ছিল, তাদের গরু-চুরি করে যান্ত্রিক কসাইখানায় কোতল করা হয়। ঘরে গোমাংস থাকার গুজবেই প্রাণ হারাতে হয়েছিল দাদরির মহম্মদ আখলাককে।
বিজেপির আর একটি সূত্রের দাবি, মুলায়ম ও অখিলেশ যাদব আর মায়াবতীদের প্রশ্রয়েই দিনে দিনে এই কসাইখানাগুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে। তাঁদের ভোটের রসদও আসে সেখান থেকে। মেরুকরণের রাজনীতির পাশাপাশি বিজেপি এ বারে সপা-বসপার তহবিলেও থাবা বসাতে চায়।