Blood Donor

বিরলতম রক্ত দান করেই আনন্দ পান আদিত্য

তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভাবছিলাম, যদি অস্ত্রোপচার করতে হয় তা হলে কোথা থেকে রক্ত জোগাড় করব! যদিও অস্ত্রোপচারের আর দরকার পড়েনি।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:৩৪
Share:

বিরলতম ব্লাড গ্রুপ নিয়ে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন আদিত্য হেগড়ে। ছবি: টুইটার।

প্রথম বার যখন রক্ত দান করেছিলেন, তখন আদিত্যের বয়স ১৭। আরও সতেরো পেরিয়ে তিনি এখন ৩৪-এর যুবক। এমনিতে এক বার রক্ত দেওয়ার পর তিন মাসের মধ্যে আর তা দান করা যায় না। কাজেই গত ১৭ বছরে সর্বাধিক ৬৮ বার রক্ত দিতে পারতেন আদিত্য। সে জায়গায় তিনি মোট ৫৫ বার রক্ত দান করেছেন।

Advertisement

তবে, প্রতি বারই কারও না কারও বিশেষ প্রয়োজনেই রক্ত দিয়েছেন আদিত্য। কারণ, তাঁর শরীরে বইছে বিরলতম এক গ্রুপের রক্ত। আদিত্যের রক্তের গ্রুপ ‘এইচ এইচ নেগেটিভ’, যা ‘বম্বে ব্লাড গ্রুপ’ নামেই বেশি পরিচিত। বেঙ্গালুরুর সিদ্দাপুরের কাছে একটি গ্রামে ১৯৮৩ সালে জন্ম আদিত্য হেগড়ের। তবে, তাঁর বেড়ে ওঠা হুব্বালিতে। পরিসংখ্যান বলছে, গোটা বিশ্বে ০.০০০৪ শতাংশ মানুষের ‘বম্বে ব্লাড গ্রুপ’ রয়েছে। আর এ দেশে প্রতি ১০ হাজার জনের মধ্যে এক জনের শরীরে রয়েছে বিরলতম ওই গ্রুপের রক্ত।

প্রথম যখন দান করেছিলেন, তখন তিনি জানতেনই না যে বম্বে গ্রুপের রক্ত রয়েছে শরীরে। আদিত্যের কথায়, ‘‘২০০৩-এ রক্ত পরীক্ষার সময় প্রথম জানতে পারলাম যে, আমার বম্বে ব্লাড গ্রুপ।’’ আর সেই সঙ্গেই জেনেছিলেন, এই ব্লাড গ্রুপটি বিরলতম।’’ তিনি বলছিলেন, ‘‘যখন জানতে পারলাম, তখনই বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় নাম লেখাই। ওরা প্রায়শই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে। আর ২০০৫-এ বেঙ্গালুরু এসে আরও কিছু ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’’

Advertisement

সম্প্রতি আদিত্য চেন্নাইয়ের এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার প্রাণ বাঁচিয়েছেন রক্ত দিয়ে। আর সেই সুবাদে ফের তাঁর নাম সংবাদ শিরোনামে এসেছে। স্মৃতি থেকে অনেক কথাই শোনাচ্ছিলেন আদিত্য। বলছিলেন, ‘‘আজকের দিনে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা সকলের কাছেই পৌঁছে যায়। কিন্তু বহু বছর আগে যখন সোশ্যাল মিডিয়ার অস্তিত্বই ছিল না, তখনও আমি হেব্বালের এক ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছিলাম। রাজেশ্বরী নগরের একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকেও রক্ত দিয়েছি। তালিকা অনেক দীর্ঘ। তবে, এমন ভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমি ভীষণ আনন্দ পাই।’’

রক্তদানকে কখনই একটা ডিউটি হিসেবে দেখেন না আদিত্য হেগড়ে। ছবি: সংগৃহীত।

তবে, অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েও নিজেকে নিয়ে বড়ই চিন্তিত ওই যুবক। সম্প্রতি একটি দুর্ঘটনায় কনুইতে ব্যাপক আঘাত পান আদিত্য। তখন তাঁর চিন্তা আরও বেড়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভাবছিলাম, যদি অস্ত্রোপচার করতে হয় তা হলে কোথা থেকে রক্ত জোগাড় করব! যদিও অস্ত্রোপচারের আর দরকার পড়েনি।’’

আরও পড়ুন: মুম্বই-অগ্নিকাণ্ড: কনস্টেবলের সাহসে মৃত্যু থামল ১৪-য়

এর পর হাল্কা হেসে বললেন, ‘‘সময় থমকে দাঁড়ালে তখন তো আর কারওরই কিছু করার থাকে না। তাই না?’’ তবে, তাঁর মতো কেউ না কেউ পাশে এসে যে দাঁড়াবে সে ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত ওই যুবক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন