ফের ছিনতাই চলন্ত ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায়। আর সেই ছিনতাইকারীকে ধরতে গিয়ে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ায় গুরুতর জখম হলেন কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলা। বৃহস্পতিবার ভোরে বিহারের বারহারোয়া জেলায় ঘটনাটি ঘটেছে আপ কলকাতা-যোগবাণী এক্সপ্রেসে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যাত্রীর নাম অঞ্জলি মল্লিক দাস। তিনি কলকাতার নিউ গড়িয়ার বাসিন্দা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, অঞ্জলিদেবী তাঁর স্কুলপড়ুয়া ছেলে আদিত্যকে নিয়ে বিহারের পূর্ণিয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তাঁরা যোগবাণী এক্সপ্রেসের এস-৬ কামরায় ছিলেন। অঞ্জলিদেবীর স্বামী চিত্তরঞ্জন মল্লিক আয়কর বিভাগে কর্মরত। এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ ট্রেনটি বিহারের বনিডাঙার কাছে আসতেই অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক অঞ্জলিদেবীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেয়। তখন ছিনতাইকারীকে ধরতে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন তিনিও। হইচই পড়ে যায় যাত্রীদের মধ্যে। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামানো হয়।
রেল পুলিশ ও রেল সুরক্ষাবাহিনী অঞ্জলিদেবীকে উদ্ধার করে গৌড় এক্সপ্রেসে মালদহে নিয়ে আসে।
তাঁকে ভর্তি করানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাঁর ডান পায়ে আঘাত রয়েছে। অঞ্জলিদেবীর ছেলে আদিত্যের কথায়, “বনিডাঙার কাছে আসার পরে ট্রেনটির গতি কমে গিয়েছিল।
দরজার কাছেই মায়ের সিট ছিল। আমাদের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় ওই
যুবক। মায়ের সঙ্গে একটু ধস্তাধস্তিও হয়। তার পরে ওই যুবক নেমে গেলে মা-ও ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেয়।” অঞ্জলিদেবীর দাবি, ওই ব্যাগে
নগদ হাজারখানেক টাকা, সোনার গয়না এবং মোবাইল ফোন ছিল। সব কিছুই ছিনতাই হয়ে গিয়েছে।
ঘটনাটি প্রসঙ্গে মালদহ জিআরপি-র আইসি ভাস্কর প্রধান বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
সম্প্রতি কলকাতার এক বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে শিলিগুড়ি যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে তাঁদেরও ব্যাগ চুরি হয়। এ ছাড়া, দার্জিলিং মেল,
গৌড় এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের সংরক্ষিত কামরাতেও প্রায়ই চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ, ট্রেনে পুলিশি টহলদারির অভাবেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতী চক্র। মালদহ রেল সুরক্ষাবাহিনীর আধিকারিক ফ্রান্সিস লোবো বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”