পরনে লাল জামা, নীল জিন্স। ঝাঁকড়া চুল, মুখে চাপ দাড়ি। মোবাইল ফোন কানে গটগটিয়ে সোজা আইসিইউয়ে ঢুকে গেল যুবকটি। পর্দা তুলে তুলে দেখতে থাকে রোগীদের। আশপাশে কিন্তু কোনও রক্ষীর দেখা নেই।
হরিয়ানার ঝজ্জর জেলার বাহাদুরগড়ের এক বেসরকারি হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট ধরা পড়েছে এই দৃশ্য। অভিযোগ এই যুবকই সদ্য মা হওয়া এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, একই উদ্দেশ্য নিয়ে ফের পাশের একটি হাসপাতালে হানা দিয়েছিল সে। আইসিইউয়েই ঢুকে এক রোগিণীর উপর চড়াও হয়। কিন্তু ওই মহিলা বিপদঘণ্টি বাজিয়ে দেওয়ায় পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। দু’টি হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে গোটা ঘটনা। তার ভিত্তিতেই খোঁজ চলছে অভিযুক্তের। ঘটনার পরেই হাসপাতালটিতে রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
২২ বছরের ওই মহিলা শনিবার এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকে আইসিইউয়েই রাখা হয়েছিল তাঁকে। এক আত্মীয়া সঙ্গে থাকলেও রাতে তাঁকে চলে যেতে বলা হয়। তাঁকে জানানো হয়, আইসিইউ-তে রোগীর সঙ্গে কারও থাকার নিয়ম নেই। রাত তিনটে নাগাদ আইসিইউয়ে ঢোকে ওই ব্যক্তি। তার পর চলে নির্যাতন। মহিলা চিৎকার করলেও কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। এই হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একই কায়দায় পাশের হাসপাতালের আইসিইউয়ে হানা দেয় অভিযুক্ত। সেখানেও এক ঘুমন্ত রোগিণীকে নিগ্রহের চেষ্টা করে। কিন্তু ওই মহিলার ঘুম ভেঙে যাওয়ায় তিনি বিপদ ঘণ্টি বাজান। এর পরেই পালিয়ে যায় অভিযুক্ত।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন নির্যাতিতার আত্মীয়েরা। এক আত্মীয়ার বক্তব্য, ‘‘ঘটনার সময় হাসপাতালে সবাই ঘুমোচ্ছিলেন। তাই ও চিৎকার করলেও কেউ ওকে সাহায্য করতে আসেননি। এমনকী কোনও চিকিৎসক বা নার্সও নন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মনে হচ্ছে, ওই ব্যক্তি গাড়িতে চেপে হাসপাতালে এসেছিল। হাসপাতালের এক রক্ষীর দাবি, নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দেয় সে। যদিও তার পরনে চিকিৎসকের পোশাক ছিল না। তা সত্ত্বেও কেন ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হল, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। দু’টি হাসপাতাল থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশপাশের এলাকাতেও অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা যাবে বলে আশ্বাস পুলিশের। হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।