বেঙ্গালুরুর রাস্তার শ্লীলতাহানির অভিযোগ মহিলাদের। ছবি: সংগৃহীত।
মহিলাদের নিরাপত্তার প্রশ্নে দেশের যে কোনও জায়গার থেকে অনেক কদম এগিয়ে থাকার কারণে এত দিন গর্ব ছিল বেঙ্গালুরুর। কিন্তু, বর্ষশেষের রাতে তার সেই গর্ব ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আগের মুহূর্তে যখন সকলেই ব্যস্ত, সেই সময় ভিড়ের মধ্যে বহু মহিলাই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে, কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন। উল্টে তাঁর দাবি, এমন কোনও ঘটনাই নাকি ঘটেনি!
আরও পড়ুন
রাতভর দামাল বাইক, পুলিশ সেই নাজেহাল
বর্ষবরণের জন্য প্রতি বছরের মতো এ বারও শহরের অভিজাত এলাকা এমজি রোড এবং ব্রিগেড রোডে প্রচুর ভিড় হয়। সেই ভিড় সামলাতে মোতায়েন ছিলেন দেড় হাজারও বেশি পুলিশকর্মী। তার ভিতর মহিলা পুলিশকর্মীরাও ছিলেন। কিন্তু, রাস্তায় উপচে পড়া ভিড় সামলাতে একেবারেই ব্যর্থ হয় পুলিশ। শহরবাসীর অভিযোগ, বর্ষশেষের জনতা সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। মোটরবাইকে চড়ে বহু দুষ্কৃতীই ভিড়ের সুযোগে একাধিক মহিলাকে কটূক্তি ও শারীরিক ভাবে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। এক চিত্রসাংবাদিকের অভিযোগ, আতঙ্কিত হয়ে একাধিক মহিলা পুলিশের সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু, তাঁদের সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। একটি সর্বভারতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ছবিতেও দেখা গিয়েছে, মহিলারা পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন। তবে এ সব অভিযোগও অস্বীকার করেছেন পুলিশ কর্তারা। ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) সন্দীপ পাতিল ও পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (কম্যান্ড সেন্টার) নগেন্দ্র কুমারের দাবি, “এ ধরনের অভিযোগ জানিয়ে পুলিশের কাছে কোনও ফোন আসেনি। সে রাতে কেউ সাহায্যও চাননি পুলিশের কাছে। এমনকী, শ্লীলতাহানির কোনও মামলাও দায়ের করেননি কেউ।”
এম জি রোডে থাকা এক যুবতীর অভিযোগ, “মহিলাদের দিকে নানা ধরনের অশ্লীল মন্তব্য করছিল একদল ছেলে। পুলিশ তাদের পিছু ধাওয়া করলেও শেষমেশ তাদের ধরতে না পেরে ফিরে আসে। বহু মহিলাই অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে পুলিশের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন।”
গোটা ঘটনা নিয়ে এখন মুখে কুলুপ পুলিশ কর্তাদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ওখানে তো ১০ হাজার পুলিশ রাখা যায় না! যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য সে রাতে দেড় হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।”
তবে সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা সামনে চলে আসায় রীতিমতো অস্বস্তিতে রাজ্য প্রশাসন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে ২৫টিরও বেশি সিসিটিভি ছিল। এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি জানিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি ওম প্রকাশ বলেন, “যে হেতু অভিযোগ উঠছে তা-ই ঘটনাস্থল থেকে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শীঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”