সুপ্রিম কোর্ট। -ফাইল চিত্র।
আগাম জামিনের সময়সীমা থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে বিভিন্ন আদালতের দুই বা তিন সদস্যের বেঞ্চ বিভিন্ন সময়ে যে সব রায় দিয়েছে, তাতে কিছুটা বিভ্রান্তির অবকাশ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ তাই বিষয়টি শীর্ষ আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়েছে। বিচারপতি কুরিয়েন জোসেফ, বিচারপতি এম এম শান্তনগৌড় ও বিচারপতি নবীন সিনহাকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দিয়েছে। মূলত দু’টি বিষয় বিবেচনা করবে বৃহত্তর বেঞ্চ। এক, আগাম জামিনের মেয়াদ বেঁধে দেওয়া উচিত কি না, যাতে ওই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে পারেন। দুই, আদালত সমন জারি করলে তখন আগাম জামিনের মেয়াদ ফুরিয়েছে বলে গণ্য করা হবে কি না।
দণ্ডবিধির ৪৩৮ ধারায় আগাম জামিনের বিষয়টি বলা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ ১৯৮০ সালের এক রায়ে বলেছিল, ‘‘সাধারণ ভাবে এর (আগাম জামিনের) মেয়াদ বেঁধে দেওয়া উচিত নয়।’’ কিন্তু ১৯৯৬ সালে শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির এক বেঞ্চ একটি মামলার রায়ে বলে, বিচার প্রক্রিয়ার স্বার্থে অবশ্যই আগাম জামিনের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকা উচিত।
পরেও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এই মত উঠে এসেছে। বিচার প্রক্রিয়া যাতে বিঘ্নিত না হয়, আগাম জামিন পাওয়া সত্ত্বেও কাউকে যাতে হেনস্থা হতে না নয় এবং বিচার এড়াতে কেউ যাতে একে ঢাল না করতে পারেন— তার জন্যই এর মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেক আইন বিশেষজ্ঞও। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, সীমারেখাটি টানা হবে কোথায়? এমন প্রস্তাবও উঠেছে, বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগাম জামিন বৈধ হোক। বিচারপতি কুরিয়েনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ জানিয়েছে বৃহত্তর বেঞ্চ গোটা বিষয়টি বিবেচনা করে বিভ্রান্তি দূর করবে। তবে আগাম জামিন মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্ক হওয়া উচিত আদালতগুলির।