জোরকদমে চলছে কমলাসাগরের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
হাট বসবে বৃহস্পতিবারে। আর কয়েক মাসের মধ্যেই ত্রিপুরার কমলাসাগর ও বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবেড়িয়ার তারাপুর সীমান্তে বসবে এই হাট। চলবে দু’দেশের নির্দিষ্ট কিছু পণ্য কেনাবেচা। বিক্রেতাদের মধ্যে যেমন থাকবেন দু’দেশের বিক্রেতা, ক্রেতারাও আসবেন সীমান্তের দু’পার থেকেই। এর আগে ত্রিপুরার সাব্রুম জেলার শ্রীনগর সীমান্তে একটি হাট চালু হয়েছে। ত্রিপুরায় এটি হবে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক হাট।
মূলত সীমান্তের দু’পারের মানুষের চাহিদা এবং পারস্পরিক আর্থিক ভিত্তি মজবুতের লক্ষ্যেই এই ধরনের আন্তর্জাতিক হাট তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ভারত ও বাংলাদেশ। হাটে পারস্পরিক অংশীদারী থাকলেও প্রকল্প নির্মাণের ব্যয়ভার বহন করছে ভারত সরকারই। বিশালগড়ের মহকুমা শাসক প্রসূন দে জানান: দু’দেশের সরকার হাটের জন্য জায়গা দিয়েছে। সেই জায়গায় ভারত সরকার প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে মোট ৫০টি দোকান ঘর। ভারতের ২৫ জন ও বাংলাদেশের ২৫ জন ব্যবসায়ীকে এই দোকান ঘর বরাদ্দ করা হবে। তবে পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি বিক্রেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যেখানে মোট ১৮টি পণ্য বিক্রির সুযোগ পাবেন, সেখানে ও-পার বাংলার বিক্রেতাদের ২৪টি পণ্য বিক্রির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রসূনবাবুর বক্তব্য, “সীমান্তে হাটের মাধ্যমে স্থানীয় উৎপাদিত পণ্যের একটি দীর্ঘ মেয়াদি বাজার নতুন করে তৈরি হবে বলেই আমরা আশা করছি।” উল্লেখ্য, দেশ ভাগের পর সীমান্ত অঞ্চলের এই প্রাচীন হাটগুলিও বন্ধ হয়ে যায় কিংবা হাট-কেন্দ্রীক অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়ে যায়। সীমান্ত পারের সেই আর্থিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করাই আপাতত এই আন্তর্জাতিক হাটগুলির লক্ষ্য।
গত বছর মে মাসে আগরতলা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের এই কমলাসাগর হাটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়। তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছে। প্রসূনবাবুর দাবি, হাটের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ। বাকি কাজও খুব শীঘ্রই শেষ হবে। প্রতি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত হাট বসবে। তবে এ হাটে থাকবে তারকাঁটার ঘেরাটোপ। থাকবে দু’পারেরই সশস্ত্র নজরদারি। আর হাটের দিন ক্রেতাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে স্ব-স্ব দেশের সচিত্র পরিচয় পত্র।