দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত সরকারের ঘোষিত পঞ্চায়েত দিবসকেই বিক্ষোভের দিন হিসেবে বেছে নিলেন করিমগঞ্জের একশো দিনের প্রকল্পের অস্থায়ী কর্মীরা। আজ সকাল থেকেই হাতে থালা-গ্লাস নিয়ে এই কর্মীরা হাজির হন জেলা গ্রামোন্নয়ন বিভাগের কার্যালয়ে। চলল ধর্না-বিক্ষোভ-স্লোগান। স্লোগান ওঠে মুখ্যমন্ত্রী এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও। আজ, ২৪ এপ্রিল রাজ্য জুড়ে ‘পঞ্চায়েত দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয় অসম সরকার। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়নে সরকার কি কি কাজ করেছে সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। কিন্তু সেই উদ্যোগে জল ঢেলে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে সারা অসম এম জি এনরেগা কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের করিমগঞ্জ জেলা কমিটি। সকাল থেকেই হাতে থালা-গ্লাস নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্মীরা তথা গ্রামোন্নয়ন রোজগার সহায়ক, কম্পিউটার সহায়ক, অ্যাক্রেডিটেড সহায়করা করিমগঞ্জ জেলা গ্রামোন্নয়ন বিভাগের কার্যালয়ে এসে হাজির হন।
সংস্থার কর্মী-নেতাদের অভিযোগ, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের অধীনে তাঁরা ঠিকা-কর্মী হিসেবে কাজ করছেন অথচ নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না। প্রকল্পের ৬ শতাংশ প্রশাসনিক ব্যয় হিসেবে ধরে তার থেকেই কর্মীদের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও অসম সরকার তাঁদের বেতন দিচ্ছে না। তাঁদের বক্তব্য, করিমগঞ্জ জেলার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। এখানে বহু কর্মী ৩৬ মাস বেতন পাচ্ছেন না। তাঁদের প্রশ্ন, যে সরকার তার কর্মীদের বেতন দিতে পারছে না, তারা আবার ‘পঞ্চায়েত দিবস’ পালন করে কেন? তাঁদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বেতন আটকে রেখে সেই টাকায় টেলিফোন বিল ইত্যাদি প্রশাসনিক খরচ সামাল দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, পাতারকান্দি ব্লক অফিসে টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা সত্ত্বেও লক্ষাধিক টাকা টেলিফোন বিলের নামে খরচ করা হচ্ছে। অভিযোগ, করিমগঞ্জের গ্রামোন্নয়ন বিভাগ প্রকল্পের টাকা খরচ করতে পারছে না। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে করিমগঞ্জে ১০ কোটি টাকা এসেছিল। তার মধ্যে খরচ করতে না পারায় পাঁচ কোটি টাকা ফেরত গিয়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ‘পঞ্চায়েত দিবস’ পালনের কোনও যৌক্তিকতাই দেখছেন না কর্মীরা। আন্দোলন কর্মসূচিতে সামিল ছিলেন নন্দকুমার দাস, সুজন আহমেদ, অভিজিত্ দে, সুদীপ্ত পুরকায়স্থ, হোসেন আহমেদ চৌধুরী, কৌশিক দে প্রমুখ সংগঠনের নেতারা। এ বিষয়ে পরে জেলা গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক হরেকৃষ্ণ লহকরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ খারিজ করে দেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই কাজ করে না। কাজ না করলে বেতন পাবে কী করে?’’