সত্যপালের দাবিকে ‘সমর্থন’ করেছেন অংসখ্য ‘বিশিষ্টজন’। ছবি: সংগৃহীত।
বাঁদর থেকে মানুষের বিবর্তন হতে কেউ দেখেননি। মানুষের পূর্বপুরুষ বাঁদর নয়, মানুষই। চার্লস ডারউইনের তত্ত্বকে নাকচ করে এমনটাই দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিংহ। এমন মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় গোটা দেশে। তবে, সত্যপালের এই দাবিকে ‘সমর্থন’ করেছেন অংসখ্য ‘বিশিষ্টজন’। তাঁদের মতে, মন্ত্রীমশাই সঠিক কথাই বলেছেন!
আসলে টুইটারের দেওয়ালে একাধিক ব্যঙ্গ-তিরে বিদ্ধ হয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী সত্যপাল। সত্যপালের দাবিকে ‘সমর্থন’ করার ছলে তীক্ষ্ণ মন্তব্য ভেসে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। লেখিকা শোভা দে লিখেছেন, “দ্বিতীয় বার ভেবে দেখলাম, ডারউইনের তত্ত্বের গলদ নিয়ে সত্যপাল সিংহ হয়তো ঠিক কথাই বলেছেন!” সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “কিছু মানুষ তো জন্ম থেকেই শুয়োর আর বাঁদর।” সত্যপালের নাম না নিয়ে বিখ্যাত সাংবাদিক অলকা সাক্সেনা বলেন, “আমি এক মত। কিছু বাঁদর তো বাঁদরই রয়ে গিয়েছে।”
ঔরঙ্গাবাদে গত ২১ জানুয়ারি সর্বভারতীয় এক বৈদিক সম্মেলনে সত্যপাল বলেছিলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষেরা বাঁদরকে মানুষে পরিণত হতে দেখেননি। কোনও কাহিনিতেও এমন ঘটনার উল্লেখ নেই। ওই তত্ত্ব স্কুল-কলেজে পড়ানো উচিত নয়।” তাঁর আরও দাবি ছিল, “গোটা বিশ্বে ডারউইনের তত্ত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে। এই তত্ত্ব মিথ ছাড়া আর কিছু নয়।” এর পরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ওই বিজেপি নেতা। টুইটার-সহ একাধিক সোশ্যাল মাধ্যমে প্রতিবাদে মুখর হন নেটিজেনরা।
আরও পড়ুন: টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে বাংলার তরুণীকে ধর্ষণ গুরুগ্রামে
অলকা বা শোভার মতো বিশিষ্টজনদের কটাক্ষের সুরেই সুর মিলিয়েছেন পরিচালক-অভিনেতা ফারহান আখতার, সাংবাদিক নীধি রাজদান বা কমেডিয়ান বীর দাসেরা। ফারহান লিখেছেন, “ব্রেকিং–ডারউইনের তত্ত্ব নিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে বাঁদরেরা। তারা যে কিছু হোমোসেপিয়েনের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত, তা অস্বীকার করছে।”
আরও পড়ুন: লোকসভা, বিধানসভায় একাই লড়বে শিবসেনা
তবে সমালোচিত হলেও নিজের বিতর্কিত মন্তব্যে অনড় সত্যপাল। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, ডারউইনের তত্ত্বের সমর্থনে সামান্যই তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। তাঁর কথায়, “বিশ্বের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ মেলে না যার থেকে বলা যায়, বিবর্তনবাদ তত্ত্বটি নির্ভুল।” মন্ত্রীর আরও দাবি, “জীবাশ্মে তো সমস্ত প্রমাণই থাকে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, লক্ষ লক্ষ বছর আগে এমন কোনও বিবর্তন দেখা যায়নি। বিবর্তনবাদের সপক্ষে একটি জীবাশ্মেও কোনও প্রমাণ মেলেনি।”
আরও পড়ুন: উড়ানে ওয়াইফাই, গুনতে হতে পারে বাড়তি টাকা
এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন
রবিবার ওই বিতর্কিত মন্তব্যের পাশাপাশি সত্যপালের দাবি ছিল, “স্কুল-কলেজে ওই তত্ত্ব পড়ানো উচিত নয়।” তবে কি স্কুল-কলেজের পাঠ্যবই থেকে ওই তত্ত্ব বাদ দিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার? সরাসরি জবাব না দিলেও এ দিন সত্যপাল বলেন, “এ বিষয়ে সত্য সামনে আনতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক যদি একটি বিশ্বমানের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে সেই প্রস্তাব রেখেছি। এবং ওই সম্মেলনে উদ্ঘাটিত সত্যই স্কুল-কলেজে পড়ানো হোক।”