বিপাকে পড়েছেন যোগী।
ত্রেতা যুগে বার্থ সার্টিফিকেটটাও নিতে পারেননি হনুমান। কলি যুগে তাঁর জাতির সার্টিফিকেট হাজির করল বিজেপি।
যেমন তেমন নেতা নন— বিজেপির হিন্দুত্বের মুখ, গোবলয়ের বৃহত্তম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গেরুয়া বসনধারী যোগী আদিত্যনাথ। রাজস্থানে বলেছেন, বজরঙ্গবলী ‘দলিত’। বলে ফেঁসেও গিয়েছেন।
শঙ্করাচার্য স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতী বললেন, ‘‘ঘোর অপরাধ করেছেন যোগী। বজরঙ্গবলী কবে আবার দলিত ছিলেন?’’ রাজস্থানের ‘সর্ব ব্রাহ্মণ মহাসভা’ আইনি নোটিস ধরিয়েছে যোগীকে। জানিয়েছে, ৩ দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। হনুমানকে শুধু ‘দলিত’ বলেই থেমে থাকেননি যোগী, ‘লোকদেবতা’, ‘বঞ্চিত’ও বলেছেন। তাতেও খেপেছেন ব্রাহ্মণরা।
তাঁদের মতে, অষ্টসিদ্ধি প্রাপ্ত করেছেন হনুমান। তিনি গোটা দুনিয়ার দেবতা। বারাক ওবামাও পকেটে হনুমানজির ছবি রাখেন। তিনি ‘লোকদেবতা’, ‘বঞ্চিত’? পৈতেধারী হনুমান ‘দলিত’? মহাভারতেও উল্লেখ আছে পবনপুত্রের। মহন্ত রাধেশ্যাম তিওয়ারি বলেন, ‘‘হনুমান দলিত ছিলেন শাস্ত্রে কোথাও নেই।’’
আরও পড়ুন: রামমন্দির নিয়ে এখন আইন চায় না বিজেপি
বিজেপি বুঝতে পেরেছে, উল্টো চাল দিয়ে ফেলেছেন যোগী। সকাল থেকে দিল্লিতে দলের নেতারা বোঝাতে থাকেন, যোগী এ কথা বলেননি। বজরঙ্গবলীকে ‘আদিবাসী’ ‘বনবাসী’ বলেছিলেন। পরের বাক্যে বলেছেন, হনুমান দলিত-বঞ্চিতদের একত্র করেছেন। শ্রোতারা ভুল বুঝেছে। সে যুক্তি মানছে কে? কংগ্রেসের অশোক গহলৌত বলেন, ‘‘হারের ভয়ে ঘাবড়ে গিয়েছে বিজেপি। হনুমানেরও জাত বিচার করছে!’’ আর দিগ্বিজয় সিংহের বক্তব্য, ‘‘যোগী তো নিজের গোরক্ষনাথেরই অপমান করলেন!’’
আরও পড়ুন: মিছিলেই মৃত্যু বাবার, ফের লং মার্চে দিল্লিতে ছেলে
অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন বিজেপি সভাপতিও। প্রশ্ন করায় অমিত শাহ বললেন, ‘‘এটি তাঁর রামায়ণের ব্যাখ্যা হবে! তিনিই এর জবাব দিতে পারেন।’’ উচ্চবর্ণের দল বলে পরিচিত বিজেপি এখন সব হিন্দুকেই একজোট করতে চায়। সঙ্ঘের মুখেও তাই ‘দলিত-দলিত’ শোনা যাচ্ছে। ভোটের মুখে সেই তাস খেলতে গিয়েই বিপাকে পড়েছেন যোগী।