ফাইল চিত্র।
বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করলে মাথা মুড়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ‘সবক’ শেখানোর নামে পাঁচ মাথার মোড়ে কান ধরে উঠবস করানো— ইভটিজিং রোখার নামে উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াডের তাণ্ডব খবরে উঠে এসেছে বারবার। উঠেছে সমালোচনার ঝড়। কিন্তু সরকারের ১০১ দিনের মাথায় আজ নিজের হাতে গড়া সেই স্কোয়াডের ঢালাও প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বললেন, ‘‘অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড গড়ার পরে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করছেন রাজ্যের মহিলারা।’’ যদিও যোগীর এই ঘোষণার দিনেও গণধর্ষণ ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে বরেলীতে গ্রেফতার হয়েছে হিন্দু যুবা বাহিনীর ৩ কর্মী। এই বাহিনীটিও যোগীরই হাতে গড়া।
সোমবার ১০০ দিনে পূর্ণ করেছে যোগী সরকার। শুরু থেকেই রাজ্যের আইনের শাসন ফেরানোকে প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন যোগী। মহিলাদের সুরক্ষায় জোর দিতে গড়েন অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড। স্কুল, কলেজ, পার্ক বা রাস্তাঘাটে মেয়েদের উত্যক্ত করা তরুণদের পাকড়াও করে ‘শাস্তি’ দেওয়াই এই স্কোয়াডের কাজ। যদিও তাতে কাজের বদলে অকাজ বেশি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। প্রশ্ন উঠেছে অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াডের এক্তিয়ার নিয়েই। তথ্যও বলছে, ক্ষমতায় আসার পরেও রাজ্যে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণে রাশ টানতে পারেননি যোগী।
দিল্লির লাগোয়ায় এলাকায়, জাতীয় সড়কের উপরে ও রাজ্যের অন্যত্রও অপহরণ, ধর্ষণ, খুন ঘটে চলেছে পরের পর। গত কাল রাতে বরেলীর গণেশনগর এলাকায় জোরে গান বাজানো নিয়ে বচসা শুরু হয় দীপক ও অবিনাশ নামে দুই যুবকের মধ্যে। অভিযোগ, এর পরেই হিন্দু যুবা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অবিনাশ চড়াও হয় দীপকের বাড়িতে। বাড়ির মহিলাদের গণধর্ষণ করে তারা। পুলিশ আজ গ্রেফতার করেছে তাদের। কিন্তু এর পরেও গ্রেফতারির প্রতিবাদে থানায় হাজির হয়ে ভাঙচুর চালায় হিন্দু যুবা বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য। সাব-ইনস্পেক্টর মায়াঙ্ক আরোরাকে মারধর করে তারা।
এক দিকে ঘটছে বরেলীর মতো ঘটনা। অন্য দিকে সাফল্য নিয়ে বড়াই যোগীর। আজও তিনি বলেন, ‘‘তাঁর সরকার উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে উত্তরপ্রদেশকে। গত ১৪-১৫ বছরে রাজ্যে উন্নতি হয়নি। রাজনীতির নামে চলেছে পরিবারতন্ত্র। ফলে মানুষ বিপদে পড়েছেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তাঁর সরকার সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্য কাজ করছে। ২০১৭ সালটিকে ‘গরিব কল্যাণ বর্ষ’ হিসেবে দেখছেন তাঁরা। তিনি জানান, প্রতি বছর ২৪ জানুয়ারি ‘উত্তরপ্রদেশ দিবস’ পালন করা হবে রাজ্যে।