ছেলে মুখ্যমন্ত্রী, রান্না ভুলেছিল পরিবার

সে দিন বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। গত শনিবার আনন্দ-উত্তেজনায় রান্নার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন বাড়ির লোকজন! কারণ ততক্ষণে উত্তরাখণ্ডের পৌড়ী জেলার পানচুর গ্রামের এই পরিবারের কাছে খবর এসে গিয়েছে, ২২ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া অজয়ই এ বার বসতে চলেছেন উত্তরপ্রদেশের তখ্‌তে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পৌড়ী (উত্তরাখণ্ড) শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৫
Share:

হিন্দুত্ব: উত্তরপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের দরজায় স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকছেন এক পুরোহিত। সোমবার লখনউয়ে। ছবি: পিটিআই

সে দিন বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। গত শনিবার আনন্দ-উত্তেজনায় রান্নার কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন বাড়ির লোকজন! কারণ ততক্ষণে উত্তরাখণ্ডের পৌড়ী জেলার পানচুর গ্রামের এই পরিবারের কাছে খবর এসে গিয়েছে, ২২ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে যাওয়া অজয়ই এ বার বসতে চলেছেন উত্তরপ্রদেশের তখ্‌তে। তামাম ভারত যাঁকে চেনে যোগী আদিত্যনাথ নামে।

Advertisement

আদিত্যনাথরা ছয় ভাই-বোন। বড় দিদি শশী সিংহ বিস্ত শনিবার সকালে মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁর কাছে ফোনটা আসে। জানতে পারেন উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন তাঁর ভাই। শশী বলেন, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে সব ফেলে ছুটে আসি বাড়িতে। খবরটা দিতেই বাড়ির সকলে বসে পড়েন টিভির সামনে। রান্নাবান্নার কথা একেবারেই খেয়াল ছিল না।’’ সন্ধেবেলায় জানা যায়— হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন যোগী আদিত্যনাথই। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা পরিবার। শশীদের বাড়ির সামনে ততক্ষণে ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রাম। কারও হাতে মিষ্টির প্যাকেট। কারও গলায় স্লোগান, ‘‘যোগী আদিত্যনাথ জিন্দাবাদ।’’

তবে বড় দিদি শশী আজ আর মনে করতে পারছেন না, অজয় কখন যোগী আদিত্যনাথ হয়ে গেলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার শুধু মনে পড়ছে, ‘ভাই বাবাকে বলেছিল, তুমি এই চার দেওয়ালের মধ্যেই থাকো! আমাকে সমাজসেবা করতে হবে।’’

Advertisement

যতই আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হোন না কেন, পানচুর গ্রামের কাছে তিনি আদরের অজয়। অজয় সিংহ বিস্ত। ১৯৭২ সালে এই গ্রামেই জন্ম তাঁর। গ্রামের জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠা আর পাঁচটা ছেলের মতোই। পৌড়ীর স্কুলের পড়া শেষ করে উত্তরাখণ্ডের এইচএনবি গঢ়বাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কে স্নাতক হন তিনি। সেই সময়েই এবিভিপি-র সংস্পর্শে আসা। তৈরি করেন নিজের হিন্দু যুব বাহিনী। আদিত্যনাথের বাবা আনন্দ সিংহ বিস্ত বলেন, ‘‘স্নাতকোত্তর পড়ার সময় ছেলের সঙ্গে দেখা হয় গুরু অবৈদ্যনাথের। একদিন অবৈদ্যনাথ আমার কাছে এসে বলেন, আপনার তো চারটি ছেলে। এই ছেলেটিকে (আদিত্যনাথ) আমায় দিন। আমি বলি এই ছেলে ইতিমধ্যেই আপনার হয়ে গিয়েছে।’’

আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৯৯৮ সালে নিজের লোকসভা আসনটি অবৈদ্যনাথ ছেড়ে দেন শিষ্য আদিত্যনাথকে। তখন থেকে টানা পাঁচ বার তিনি গোরক্ষপুরের সাংসদ। বহু বিতর্ককে সঙ্গী করে সংসার-ত্যাগী সেই সন্ন্যাসীই আজ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন