যোগী আদিত্যানাথ।—ফাইল চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় তিনি বললেন, বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। সেই শিক্ষার জোরেই নিশ্চিত করবেন, শিশু-মৃত্যুর ভয়াবহতা যেন আর ফিরে না আসে। বললেন, গোরক্ষপুরে নানা রোগের প্রকোপ নিয়ে বহুদিন ধরেই তিনি সরব। বিরোধীদের প্রশ্ন, তা হলে এত দিনে কাজের কাজটা কী করতে পেরেছেন যোগী আদিত্যনাথ?
প্রায় ২০ বছর গোরক্ষপুরের সাংসদ ছিলেন। হালে মুখ্যমন্ত্রী। যোগীর ‘সাম্রাজ্য’ সেই গোরক্ষপুরেই গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে মারা গিয়েছে অন্তত ৬৩টি শিশু। সেই চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে আজ যোগী বলেছেন, “দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই লক্ষ্য স্থির করে কাজ করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।” গোরক্ষপুরে এনসেফ্যালাইটিসের সমস্যা দূর করতে যোগী আজ হাতিয়ার করেছেন নরেন্দ্র মোদীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে। বলেছেন, “অপরিচ্ছন্নতা দূর হলেই এই সব রোগ দূর হবে।”
আরও পড়ুন: দুর্নীতি দমনে সরব মোদী, জবাব নেই নোট ফেরতের প্রশ্নে
এমনকী লালকেল্লার বক্তৃতায় আজ গোরক্ষপুর নিয়ে মুখ খুলতে হয়েছে খোদ মোদীকেও। গত ক’দিনে এই প্রথম। মোদী পূর্ব উত্তরপ্রদেশেরই বারাণসীর সাংসদ। আজ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “গত ক’দিনে নানা প্রান্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে মারা গিয়েছে শিশুরা। এই সঙ্কটে যাঁরা পড়েছেন, সারা দেশের মানুষ তাঁদের পাশে আছে।’’ কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মার অভিযোগ, “চূড়ান্ত গাফিলতিতে এতগুলি শিশু, নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। অথচ গোরক্ষপুরের ঘটনাকে অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে এক তালিকায় ফেলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী!”
গোরক্ষপুরের হাসপাতালটিতে অক্সিজেনের জোগানে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল গোড়াতেই। যোগী আজ বলেছেন, “আমরা কি প্রশাসনে আর কোনও দুর্নীতি হতে না দেওয়ার সঙ্কল্প করতে পারি?’’ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, গত ২১ বছর ধরে পূর্ব উত্তরপ্রদেশে এনসেফ্যালাইটিস, কালাজ্বর, ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে বলে আসছেন তিনি। সেখানকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখেছেন, প্রতি বছরে ওই এলাকায় ৫০০ থেকে ১ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। এখানেই সমাজবাদী মার্টির মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরির প্রশ্ন, এত জেনেও যোগী করেছেনটা কী? গোরক্ষপুর থেকে এনসেফ্যালাইটিস দূর করা হোক, বা দুর্নীতি দমন— সে সব তো তাঁরই দায়িত্ব। বিরোধীদের অভিযোগ, স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে ঢাল করে আজ কৌশলে জনতার উপরেই যাবতীয় দায়িত্ব চাপিয়ে দিলেন যোগী!