যোগী আদিত্যনাথ।—ফাইল চিত্র।
কুম্ভমেলার জন্য নতুন বছরের গোড়ায় প্রয়াগরাজে ‘প্রজাপতি’-কে নিষিদ্ধ করলেন যোগী আদিত্যনাথ ! সেখানে ওই সময় কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে তাঁর সরকার।
ও দিকে, প্রয়াগরাজে অনেকেরই বিয়ে পাকা হয়ে গিয়েছে। ভাড়া করা হয়ে গিয়েছে বিয়েবাড়িও। নতুন বছরের শুরুতেই সাতপাকে বাঁধা পড়ার কথা ছিল অনেকের। কিন্তু যোগী সরকারের নির্দেশের ফলে বিয়েটা আপাতত সেরে নেওয়া যাচ্ছে না বলে খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন প্রয়াগরাজের হবু বর-কনেরা। কারণ তাঁদের বিয়েতে বাধ সেধেছে যোগী সরকার।
১৫ জানুয়ারি থেকে প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলা শুরু হচ্ছে। যা প্রায় দু’মাস ধরে চলবে। ৪ মার্চ পর্যন্ত।যোগী সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কুম্ভস্নানের এক দিন আগে থেকে কুম্ভস্নান শেষ হওয়ার এক দিন পর পর্যন্ত প্রয়াগরাজে কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান করা যাবে না। স্থানীয় প্রশাসন তো বটেই, প্রয়াগরাজের সব বিয়েবাড়ি এবং হোটেলের মালিককে ওই নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বুকিং হয়ে গিয়ে থাকলে তা বাতিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রজত মৃত্যু রহস্য লুকিয়ে ওই আধ ঘণ্টায়, স্ত্রীকে এ বার থানায় ডেকে টানা জেরা
দু’মাস ধরে কুম্ভমেলা চলার সময় জানুয়ারিতে দু’টি মকরসংক্রান্তি এবং একটি পৌষ পূর্ণিমায় স্নানের তিথি পড়ছে। ফেব্রুয়ারিতে পড়ছে মৌনী অমাবস্যা, বসন্ত পঞ্চমী এবং মাঘী পূর্ণিমা স্নানের তিথি। মার্চে থাকছে মহাশিবরাত্রির স্নান। প্রতি বছরই সেখানে পুণ্যস্নানে অংশ নিতে যান হাজার হাজার মানুষ। এ বছরও তার অন্যথা হবে না। সেই সময় বিয়েবাড়ি থাকলে যানজট বাড়বে বই কমবে না। ভিড় সামলাতে না পারলে কোনও অঘটনও ঘটে যেতে পারে। ভোটের বছর বলে তাই আগেভাগেই ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে যোগী সরকার।
ওই সিদ্ধান্ত অব্শ্য একেবারেই মনঃপুত হয়নি প্রয়াগরাজের সাধারণ মানুষের। যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে, তাঁরা প্রয়াগরাজের আশপাশের জেলাগুলিতে বিয়েবাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। কিন্তু কষ্টের টাকা জমিয়ে যাঁরা বিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন, আগাম টাকা দিয়েছিলেন কেটারিং সার্ভিসকে, বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। এত কম সময়ের মধ্যে বিকল্প বন্দোবস্ত করা সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষে। আবার বিয়ের মরসুমের উপর নির্ভর করেই যাঁদের সংসার চলে, আচমকা সরকারের এমন ঘোষণায় সমস্যায় পড়েছেন সেই সব ব্যবসায়ীরাও। আগেভাগে জানালে তবু কিছু একটা করা যেত। কিন্তু এখন বুকিংয়ের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে আফশোস করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: রানির গদি ওল্টাতে রানিই ভরসা কংগ্রেসের, ভয়ও তাঁর ‘সম্মোহনী’ ক্ষমতাকেই
বছরভর গঙ্গাদূষণ নিয়ে নির্বিকার থাকলেও, কুম্ভমেলার আগে আচমকাই সেই চিন্তা মাথাচাড়া দিয়েছে যোগী সরকারের। তাই চলতি মাসের ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর ১৫ মার্চ পর্যন্ত, টানা তিন মাস কানপুরের সমস্ত চামড়ার কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে তারা। ফলে, রুজি রোজগারের চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন বহু মানুষ।