লোকসভা ভোটের আগে শাসক শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলতে দলিত নিগ্রহের ঘটনাগুলি নিয়ে সর্বস্তরে সরব হওয়ার জন্য দলকে নির্দেশ দিলেন রাহুল গাঁধী। তাঁর লক্ষ্য, চিরাচরিত দলিত ভোটকে ফের কংগ্রেসের ছাতার তলায় ফিরিয়ে আনা।
নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দলিত নিগ্রহের ঘটনা বেড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল গেরুয়া শিবিরের দিকে। মোরাদাবাদে আজও অম্বেডকরের মূর্তি ভাঙচুর হয়েছে। দলিত নির্যাতন প্রতিরোধ আইন লঘু করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিজেপিরই একাধিক দলিত নেতা। সুর চড়িয়েছেন শরিক নেতা রামবিলাস পাসোয়ান। গত মার্চেই ভারত বন্ধ ঘিরে অন্তত ১০টি রাজ্যের দলিত সমাজের মানুষ বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। ৯ অগস্ট ফের ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছেন দলিতরা। সব মিলিয়ে নির্বাচনের এক বছর আগে দলিত কাঁটায় ক্ষতবিক্ষত বিজেপি। সেই ক্ষত আরও বাড়াতে দলিত প্রশ্নে পরিকল্পিত আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি।
সম্প্রতি মেরঠে এক দলিত ব্যক্তি উচ্চবর্ণের রোষের শিকার হলেও প্রশাসনের সক্রিয়তা দেখা যায়নি। ওই ঘটনাকে তুলে ধরে নির্যাতিতের পাশে দাঁড়িয়ে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র করার ডাক দিয়েছেন রাহুল। দলের তফসিলি জাতি শাখার প্রধান নিতিন রাউতকে চিঠি লিখে তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি শাসিত প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় বিভিন্ন রাজ্যে— বিশেষত উত্তরপ্রদেশে দলিত ও সংখ্যালঘু সমাজের মনে ভয়ের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কংগ্রেসের উচিত, ওই সব নির্যাতিতদের পাশে প্রকাশ্যে দাঁড়ানো এবং দলিতদের দুরবস্থার বিষয়টি সর্বস্তরের মানুষের সামনে আনা।’’
দলীয় সূত্রের মতে, দীর্ঘদিন বিপুল সংখ্যক দলিত ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। পরে মায়াবতী দলিতদের প্রতিনিধি হিসেবে উঠে আসেন। গত লোকসভায় দলিত সমাজ বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছিল। এখন রাহুল চাইছেন, দলিত ভোটকে আবার কংগ্রেসের ছাতার তলায় আনতে। তাঁদের আস্থা অর্জনের লক্ষ্যে কংগ্রেস সভাপতি হাতিয়ার করছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষকে।
মোদী-অমিত শাহ জানেন, ২০১৪-র পরিস্থিতি আর নেই। বরং গোটা দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র হচ্ছে দলিত-অসন্তোষ। দেরিতে হলেও দলিত সমাজের মন পেতে মাঠে নেমেছেন অমিত। উত্তরপ্রদেশে দাঁড়িয়ে বিজেপি সভাপতি স্লোগান দিয়েছেন ‘জয় ভীম’ বলে। অমিতের পাশাপাশি খোদ প্রধানমন্ত্রীকে নামিয়ে কী ভাবে দলিত মন জয় করা যায়, সেই অঙ্কও কষছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
রাহুল এ দিন নাম না-করে আক্রমণ করেছেন মোদী এবং নীতীশ কুমারকে। বিহারের হোমে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রতিবেদন টুইট করে প্রধানমন্ত্রীকে ‘আশ্বাসন বাবু’ এবং নীতীশকে ‘সুশাসন বাবু’ বলে খোঁচা দিয়েছেন তিনি।