Abhishek Banerjee

মন্ত্রীকে না পেয়ে অভিষেক চেপে ধরলেন কেন্দ্রীয় কৃষিসচিবকেই, ‘সিবিআই হোক, কিন্তু টাকাটা দিন’

কৃষিসচিব তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে জানান, সকালে সংসদে ছিলেন মন্ত্রী। তার পর নিজের সংসদীয় এলাকার কাজে বিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রকে ছিলেন না গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:২৬
Share:

কেন্দ্রীয় কৃষিসচিবের সঙ্গে আলোচনায় তৃণমূল সাংসদরা। ছবি: টুইটার।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দর্শন চেয়েও মেলেনি। তাই ১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে দিল্লির কৃষিভবনে যাওয়া তৃণমূল সাংসদরা কেন্দ্রীয় কৃষিসচিবের কাছেই তাঁদের দাবি সংবলিত স্মারকলিপি তুলে দিলেন। বুধবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের নেতৃত্বে ২৫ জন সাংসদের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লির কৃষিভবনে যায়। কিন্তু মন্ত্রীর দেখা না পেয়ে সচিবের কাছেই নিজেদের দাবির কথা জানান সাংসদরা। সচিবের সঙ্গে কথোপকথনে অভিষেক বলেন, “১০০ দিনের কাজে অনিয়মের অভিযোগ এলে প্রয়োজনে সিবিআই তদন্ত করুন, আদালতে যান, কিন্তু রাজ্যের প্রাপ্য মিটিয়ে দিন।” টাকা আটকে রাখার কারণ হিসাবে কেন্দ্রীয় কৃষিসচিব হিসাবে গরমিলের কথা জানিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই ওই মন্তব্য করেন অভিষেক।

Advertisement

রাজ্যগুলি থেকে নেওয়া রাজস্বের একটা অংশই কেন্দ্র পুনরায় রাজ্যগুলিকে পাঠায়, এ কথা জানিয়ে অভিষেকরা বলেন, “কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখায় বাংলার ১৭ লক্ষ পরিবার পারিশ্রমিক পাচ্ছে না। তাই তাদের স্বার্থে বকেয়া ৭ কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়া হোক।” বিগত দেড় বছর ধরে বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে বার বার চিঠি পাঠানো হয়েছে বলেও জানান অভিষেক। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, “দু’বছর ধরে কেন টাকা আটকে রাখা হয়েছে, তার সদুত্তর দিতে পারেননি সচিব।”

Advertisement

সচিব তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে জানান, সকালে সংসদে ছিলেন মন্ত্রী। তার পর নিজের সংসদীয় এলাকার কাজে বিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। মন্ত্রকে ছিলেন না গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীও। সচিব সাংসদদের বসতে বলে চা-কফি খেতে বলেন। কিন্তু অভিষেক তাঁকে বলেন, “আমরা চা-কফি খেতে আসিনি। আমরা প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি চাই।” তার পরই দুপুর ২টো নাগাদ কৃষি ভবনের মধ্যেই ধর্নায় বসেন ২৫ জন তৃণমূল সাংসদ।

পাওনা আদায়ে তাঁরা যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়াতে চান, মঙ্গলবারই সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন অভিষেক। বলেছিলেন, “একাধিক বার আমাদের প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে একশো দিনের কাজের বকেয়া কেন্দ্রীয় অর্থ দাবি করেছে। কিন্তু লাভ হয়নি।” অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, “একমাত্র বাংলার টাকাই আটকে রাখা হয়েছে।” বিজেপির তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, রাজ্য খরচ করা টাকার হিসাব না দেওয়ার কারণেই টাকা আটকে রাখা হয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের তরফে বলা হয়, দুর্নীতির প্রমাণ থাকলে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের প্রাপ্য টাকা মিটিয়ে দিক।

আর কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। সে কথা মাথায় রেখেই গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পে আটকে থাকা টাকা আদায়ে ‘সক্রিয়’ হতে চাইছে তৃণমূল। গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনার’ দাবিতে রেড রোডে দু’দিনের ধর্নায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্নার শেষে, আন্দোলনকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তার পরই রবিবার দিল্লি সফরে যান অভিষেক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন