গ্যাংস অব ওয়াসিপুর-২ সিনেমার একটি দৃশ্য।
গায়ে আকাশি রঙের শার্ট। মুখে আশ্চর্য নির্লিপ্তি ছড়িয়ে। হাতে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র। আর সেই আগ্নেয়াস্ত্র থেকে উল্টোদিকের রাজনৈতিক নেতার শরীরে একের পর এক, অসংখ্য বুলেট বিঁধিয়ে দিচ্ছেন নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর-২’-এর শেষ দৃশ্য।
অগুন্তি গুলি বিঁধানোর এই দৃশ্য যার চরিত্র অবলম্বনে তৈরি হয়েছিল বলে শোনা যায়, তার নাম অবিনাশ শ্রীবাস্তব ওরফে অমিত। ৩৫ বছরের সেই অমিতকে গত রবিবার বিহার পুলিশ বৈশালী থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশি জেরার সময় অমিতের অপরাধমূলক কাজকর্ম নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই সময় তার মুখেও দেখা যায় নওয়াজউদ্দিনের সেই আশ্চর্য নির্লিপ্তি। পুলিশ কর্তাদের জেরার মুখে সে শুধু একটা বাক্যই বলে, ‘‘গুগ্লে গিয়ে ‘সাইকো কিলার অমিত’ সার্চ দিলেই সব জবাব পেয়ে যাবেন।’’ যা শুনে পুলিশ কর্তাদের মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় হয়।
পুলিশের খাতা অনুযায়ী অমিত এক জন সাইকোপ্যাথিক সিরিয়াল কিলার। এখনও পর্যন্ত সে খাস রাজধানী পটনাতেই ২২টি খুন করেছে। রবিবার বৈশালীর একটি ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে টাকা ডাকাতি করার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। খুনের মামলায় জামিন পেয়ে গত মার্চ মাসেই জেলের বাইরে বেরিয়েছিল। তার পরে ফের অপরাধ জগতে ভিড়ে যায়।
তবে, প্রথম জীবনে অমিত ভাল ছেলে ছিল বলে পুলিশের দাবি। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর পাশ করে মেধাবী ছাত্র অমিত। তার পর কাজ শুরু করে একটি আইটি কোম্পানিতে। কিন্তু, এই সময়েই তার বাবা লালন শ্রীবাস্তব খুন হয়ে যান। পুলিশ প্রশাসন যখ অপরাধী ধরতে ব্যর্থ হয়, তখনই বাবার খুনের বদলা নিতে নিজের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে নেয় অমিত। মূল অভিযুক্ত পাপ্পু খানকে প্রকাশ্যে গুলি করে মারে সে। পুলিশ রেকর্ড অনুযায়ী, তার শরীরে অমিত বিঁধিয়ে দিয়েছিল ৩২টি বুলেট। সেই শুরু। এর পর ওই খুনের ঘটনায় জড়িত আরও চার জনকে গুলি করে মারে সে। তার পর থেকেই বদলে যায় অমিতের জীবন। সাইকোপ্যাথিক সিরিয়াল কিলার হিসাবে পুলিশের খাতায় লাল কালিতে লেখা তার নাম উঠে যায়।
অমিতের সঙ্গে অনেকেই মুম্বই-গ্যাংস্টার রমন রাঘবের মিল খুঁজে পান। ষাটের দশকে রাঘব সিরিয়াল কিলার হিসাবে মুম্বই পুলিশের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল।