অভয়ারণ্য গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেই মিলবে ভোট। এ বার এমনই দাবি উঠল নাগাল্যান্ডে।
মককচং জেলার উংগমা গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভোটের আগে পাকা রাস্তা, বাসস্থান, পানীয় জল, কর্মসংস্থানের দাবি অনেকেই তোলেন, জঙ্গল বাঁচানোর দিকে নজর থাকে না কারও। তা-ই অভয়ারণ্য তৈরির কথা বলছেন তাঁরাই। নাগাল্যান্ডের এক মাত্র লোকসভা আসনে ৯ এপ্রিল নির্বাচন। ভোট ময়দানে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও। কিন্তু, কংগ্রেস-সহ অন্য দলও বিনা যুদ্ধে জমি ছাড়তে নারাজ। নাগাল্যান্ডে ভোট মানেই টাকা এবং মদের দেদার ‘বিতরণ’। কিন্তু, উংগমা গ্রামের হাজার দশেক মানুষ সে সব চেনা ছকের বাইরে থাকতে চাইছেন। উত্তর-পূর্বের অধিকাংশ রাজ্যে, বনভূমি কেটে বসতি গড়তে সাহায্য করাও ভোট পাওয়ার চাবিকাঠি। উংগমার বাসিন্দারা তা হলে কেন বলছেন, ‘দাও ফিরে সে অরণ্য’!
গ্রামসভার চেয়ারম্যান ইমোলেম্বা জামির বলেন, “গ্রাম ও পাশের লোংচা গ্রাম দিক্ষু ‘গ্রিন জোন’ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ওই জঙ্গলে অনেক প্রাণী রয়েছে। আমরা সেখানকার সব কিছু বাঁচাতে চাই। যে রাজনৈতিক দল ওই জঙ্গলকে অভয়ারণ্য করতে সাহায্য করবে, তাকেই আমরা ভোট দেব।”
উংগমার লাগোয়া জঙ্গল বাঁচাতে ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীরা গড়ে তুলেছেন, ‘উৎগমা ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট কমিটি’। সেটির চেয়ারম্যান সি টিয়া লংকুমার জানান, গ্রামের উত্তর দিকে ৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় অভয়ারণ্য গড়তে চান তাঁরা। তার নামও ঠিক হয়েছেওকি মেনডেন ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি (বাংলায়, পূর্বপুরুষের আসন)। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, ওই অরণ্যের প্রকৃতি, বৃক্ষে তাঁদের পূর্বপুরুষের আত্মারা রয়েছেন।
রাজ্য বন দফতর জানিয়েছে, ওই জঙ্গলে কয়েক প্রজাতির হরিণ, এশিয়ার কালো ভালুক, বুনো ছাগল, চিতাবাঘ, বুনো শুয়োর ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে। নাগাল্যান্ডের প্রধান মুখ্য বনপাল লোকেশ্বর রাও মাদিরাজু বলেন, “ওখার বাসিন্দারা এর আগে আমুর বাজপাখি সংরক্ষণে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়ে বিশ্বে নাগাল্যান্ডের মাথা উঁচু করেছেন। এ বার, উংগমার বাসিন্দারা অভয়ারণ্য তৈরির স্বপ্ন দেখছেন। আমরা সব রকম ভাবে উংগমার মানুষকে সাহায্য করব।” নাগাল্যান্ডে বর্তমানে ফাকিম, রাঙাপাহাড় ও পালিবাডজে অভয়ারণ্য রয়েছে। জাতীয় উদ্যান ইনটাংকি।