আমদাবাদ ও ভোপালে পিকে-প্রতিবাদে বজরঙ্গ

মুম্বইয়ের কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার গোলমাল শুরু হল আমদাবাদ আর ভোপালেও। সব কিছুর মূলে রাজকুমার হিরানি পরিচালিত ছবি ‘পিকে।’ যাঁরা এই ছবি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, তাঁদের অভিযোগ, হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করেছে পিকে। বিক্ষোভকারীরা আমদাবাদ এবং ভোপালে প্রতিবাদ জানাতে কোথাও হলে ভাঙচুর করেছে, কোথাও আবার স্লোগান দিয়েছে। ঘটনাচক্রে যে দু’রাজ্য পিকে নিয়ে প্রতিবাদে মুখর, সেই দু’টিতেই শাসক দল বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৪:০১
Share:

ভোপালে বিক্ষোভ। সোমবার। ছবি: পিটিআই

মুম্বইয়ের কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার গোলমাল শুরু হল আমদাবাদ আর ভোপালেও। সব কিছুর মূলে রাজকুমার হিরানি পরিচালিত ছবি ‘পিকে।’

Advertisement

যাঁরা এই ছবি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, তাঁদের অভিযোগ, হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করেছে পিকে। বিক্ষোভকারীরা আমদাবাদ এবং ভোপালে প্রতিবাদ জানাতে কোথাও হলে ভাঙচুর করেছে, কোথাও আবার স্লোগান দিয়েছে। ঘটনাচক্রে যে দু’রাজ্য পিকে নিয়ে প্রতিবাদে মুখর, সেই দু’টিতেই শাসক দল বিজেপি।

অথচ বিজেপিরই বর্ষীয়ান নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী কিন্তু সম্প্রতি আমির খান অভিনীত ছবিটি দেখে প্রশংসায় মুখর হয়েছেন। তাঁর মতে, পিকে অসাধারণ, সাহসী ফিল্ম। কিন্তু আমদাবাদ-ভোপালে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বজরঙ্গ দল। যারা আদতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যুব শাখা। ছবিতে দেখানো হয়েছে, ধর্মগুরুরা নিজেদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করছেন তাতেই চটেছে বজরঙ্গ দল। আমদাবাদের প্রেক্ষাগৃহের জানলা ভেঙেছে তারা। সেখানে তখন পিকে দেখানো হচ্ছিল।

Advertisement

রাঁচিতেও ছবি দেখানোয় আপত্তি তুলেছে শিবসেনা। আজ প্লাজা প্রেক্ষাগৃহের সামনে পঞ্চাশ-ষাট জন শিবসেনা সমর্থক বিক্ষোভ দেখায়। আমির খানের পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয়। পোড়ানো হয় কুশপুতুলও। বিক্ষোভকারীরা জানান, রাঁচিতে যেখানে যেখানে ছবি দেখানো হচ্ছে, সেখানেই গন্ডগোল হয়েছে। চাপের মুখে প্লাজা কর্তৃপক্ষ বিকেলের পরের দুটি শো বন্ধ করে দেন। প্রশাসনের আশ্বাস পেলে তবেই কাল থেকে ছবিটি দেখানো হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ মুম্বইয়ের পারেলে এক হল মালিক জানালেন, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের লোকজন হুমকি দিচ্ছে। তাই পিকে প্রদর্শন বন্ধ করা ছাড়া তাঁর কোনও উপায় ছিল না। তাঁর কথায়, “আমরা আক্রমণের সহজ লক্ষ্য। ৪০ জন লোক একসঙ্গে হাজির! বলছে শো বন্ধ না হলে বিল্ডিংটাই তছনছ করব।” অনেক মালিকের অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে ছড়ানো হচ্ছে একটি চিঠি। সেটি বিশ্ব হিন্দু পরিষদই ছড়াচ্ছে বলে তাঁদের দাবি, হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করলে ফল ভুগতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। দেশ জুড়ে ইতিমধ্যেই ফিল্মটির বিরুদ্ধে কয়েকটি এফআইআর হয়েছে। ছবি নিয়ে বেজায় খেপে গিয়েছেন যোগগুরু রামদেব। কয়েক দিন আগেই তিনি জানান, মানুষের উচিত ছবিটি বয়কট করা। গত কাল পিকে ঘিরে তাদের অসন্তোষ কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদও।

কেউ কেউ অভিযোগের আঙুল তুলছেন আমির খানের দিকে। দাবি, আমির মুসলিম বলেই হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত করতে পেরেছেন। অভিযোগ উড়িয়ে আমির বলেন, “আমরা সব ধর্মকেই সম্মান করি। আমার অসংখ্য হিন্দু বন্ধু ছবি দেখেছেন। কারও এমন মনে হয়নি।” আমিরের মতে, পরিচালক রাজকুমার হিরানি, প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়া, চিত্রনাট্যকার অভিজিৎ জোশী প্রত্যেকেই হিন্দু। ছবির ৯৯ শতাংশ কর্মী হিন্দু। কারও মনে হয়নি ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন