এক সঙ্গে এত লোক আগে আর দেখেনি করিমগঞ্জ জেলার বদরপুর থানার বসলা গ্রাম।
আজ সকাল থেকে পাথারকান্দি, করিমগঞ্জ, বদরপুর, ভাঙ্গার মানুষ ছুটছিলেন। লক্ষ্য বসলা। রাতারাতি শিরোনামে উঠে আসা শরিফউদ্দিনকে শেষ বারের মত দেখতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়ছিল লাফিয়ে লাফিয়ে। এক সময় বাড়ির ভিতরে পা রাখার জায়গা ছিল না। উঠোন উপচে গলিপথ, পাড়ার রাস্তা, গ্রামের পথলোকে লোকারণ্য।
কাল গভীর রাত থেকে শরিফের স্ত্রী হোলি খান ও পরিবারের অন্য সদস্যরা অসম-নাগাল্যান্ড সীমানার খটখটিতে শরিফের দেহ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করলেও বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি চলছিল। এ নিয়ে আজ অসম বিধানসভায় সরব হন বদরপুরের বিধায়ক জামালউদ্দিন আহমেদ। এর পর মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের নির্দেশে রাজ্য শরিফের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। ডিমাপুর প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। শেষ পর্যন্ত বিকেলে ডিমাপুর মুসলিম কাউন্সিলের হাতে শরিফের দেহ তুলে দেওয়া হয়। সেই দেহ ডিমাপুর থেকে শিলচর ছুঁয়ে করিমগঞ্জ সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠে পৌঁছয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর কপ্টারে। তখন বিকেল। সেখান থেকে ‘স্বর্গরথ’ নামের শববাহী শকটে কফিনবন্দি দেহ পৌঁছয় বসলায়।
ভিড় ছিল করিমগঞ্জের স্কুল মাঠেও। ছিলেন দক্ষিণ করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্দেক আহমদ, জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাইবরুয়াও। পরে অতিরিক্ত জেলাশাসক বি সি নাথ দেহ নিয়ে রওনা দেন বসলায়। স্থানে স্থানে মানুষ গাড়ি দাঁড় করান। শরিফের মুখ দেখতে চান তাঁরা। অধিকাংশের কাছেই নিহত যুবক অচেনা। ১৩ বছর আগে ব্যবসার খাতিরে বাড়ি ছেড়ে পাড়ি দেন ডিমাপুরে। বিয়ে সেখানেই। হত্যা কাণ্ডের পর সেই অপরিচিত শরিফই সকলের কাছের মানুষ।