অসম মন্ত্রিসভা থেকে হিমন্তবিশ্ব শর্মার ইস্তফা বিনাবাক্যে গৃহীত হওয়ায় এবং মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ হিমন্তের দুই ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীকে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করায় রাজ্য কংগ্রেসের বিদ্রোহী শিবিরের আস্ফালন আজ অনেকটাই স্তিমিত। যদিও গগৈ-বিরোধী তোপ দাগা জারি রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে চরম সময়সীমা দেওয়া বা চাপ ও হুমকি দেওয়ার যে কৌশল হিমন্ত-শিবির নিয়েছিল তা তারা বন্ধ করেছে।
আজ রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্যপাল হিমন্তের ইস্তফাপত্র এবং অর্ধেন্দু দে ও সিদ্দেক আহমেদের মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের প্রস্তাব গ্রহণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। এই তিন জনের দফতরও আজ বিভিন্ন মন্ত্রীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও করেন। আগে দলীয় এই বিদ্রোহ দমনে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড গগৈকে তাঁর মন্ত্রিসভায় রদবদলের জন্য সবুজ সঙ্কেত দেন। তবে গগৈ তখনও বিষয়টি মেটাতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ব্যাপারে গগৈ ও কলিতা শীঘ্রই দিল্লি যেতে পারেন। এরই পাশাপাশি, হিমন্তের ভূমিকার সমালোচনা করে মন্ত্রীদের বৈঠকে একটি প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। হিমন্তের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সনিয়া গাঁধীকে অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হবে বলেও ঠিক হয়েছে। বিদ্রোহী শিবিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমাণ হাইকম্যান্ডের হাতে তুলে দিতে ইতিমধ্যেই গগৈ শিবিরের তিন বিধায়ক দিল্লি গিয়েছেন।
মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত সিদ্দেক আহমেদ আজ বলেন, “ভালই হয়েছে। মন্ত্রী থাকলে অনেক কথা খুলে বলা যায় না। এ বার লড়তে সুবিধা হবে।” সিদ্দেক আহমেদের অপসারণের প্রতিবাদে তাঁর অনুগামী কংগ্রেস নেতারা আজ বরাক উপত্যকায় বন্ধ ডাকলেও তাতে কার্যত সাড়া মেলেনি। দক্ষিণ করিমগঞ্জের এই কংগ্রেস বিধায়কের নিজের এলাকা বারইগ্রামে দোকানপাট বন্ধ ছিল। অন্যত্র জনজীবন স্বাভাবিকই ছিল। তবে, সংখ্যালঘু প্রতিনিধিকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে আমসু ও এবিএমএসইউ আজ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে গগৈয়ের কুশপুতুল দাহ করে। আর এক অপসারিত মন্ত্রী অর্ধেন্দু দে তাঁর অপসারণ প্রক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হিমন্ত যখন গগৈয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চান তখন আমিই সবাইকে বুঝিয়ে নিরস্ত করি। দলের খারাপ সময়েও আমি লড়াই ছাড়িনি। আমার দফতরের কাজের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও জানি না মুখ্যমন্ত্রী কেন আমায় অপসারণ করলেন।”