শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার রাষ্ট্রপতি ভবনে। ছবি: পিটিআই।
শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে যাওয়ার পর আর দেরি না করে সে দেশের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন মাত্রা আনতে তৎপর নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে আজ নয়াদিল্লিতে হাজির হয়েছেন শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা। আগামী দিনে ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক কোন পথে চলবে তা স্থির করা হয়েছে এই বৈঠকে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, চিনের উপরে অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ভারসাম্যের পথে হাঁটার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সিরিসেনা। আজ অসামরিক পরমাণু চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে দু’দেশ। এই প্রথম এই ধরনের চুক্তি করল কলম্বো।
রাজাপক্ষের আমলে এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব দীর্ঘ দিন ধরেই চাপে রেখেছিল ভারতকে। সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ভুলে পরিবারতন্ত্রের পথে হাঁটছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ফলে, দিল্লির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তাঁর। ক্রমশ চিনের দিকে ঝুঁকে পড়েন রাজাপক্ষে। কলম্বোয় নতুন রাজনৈতিক জমানায় এই অস্বস্তিকে কাটিয়ে নতুন করে পথ চলা শুরু করতে চাইছে নয়াদিল্লি।
মোদী আজ সিরিসেনার সঙ্গে বৈঠকের পরে বলেছেন, “একটি বিস্তীর্ণ এলাকায় হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। দু’দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তা, সমুদ্র নিরাপত্তার কথা মাথায় রাখা প্রয়োজন।” স্থির হয়েছে আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে কলম্বো সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, তামিল স্বার্থকে পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া, ভারতের সঙ্গে পরিকাঠামো এবং শক্তি ক্ষেত্রে সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া, কৌশলগত মৈত্রীর মতো বিষয়গুলিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদী। আজই এলটিটিই-বিরোধী অভিযানের সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে নিজেদের রিপোর্ট পেশ ছ’মাস পিছিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ। আমেরিকা-সহ অনেক দেশ বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিল্লি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
আজ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে হওয়াপরমাণু চুক্তিটি নিয়ে বিশদে মুখ খোলেনি মোদী সরকার। তবে কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, এই চুক্তি দু’দেশের সহযোগিতার নতুন রাস্তা খুলে দিল।