জোট গড়েও নতুন অঙ্কের খোঁজে অমিত

শরিক দলের উপরে ভরসা নেই। তাই ঝাড়খণ্ডে বন্ধু দলকে নিজেদের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে রাজ্য শাসন করতে চাইছে বিজেপি। আজ সকালে রাঁচির মোরাবাদি ফুটবল ময়দানে জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিজেপি নেতা রঘুবর দাস। তিনিই হলেন রাজ্যের প্রথম অনুপজাতি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গেই শপথ নিয়েছেন বিজেপির চন্দ্রেশ্বরপ্রসাদ সিংহ, লুইস মরান্ডি, নীলকন্ঠ মুন্ডা। শপথ নিয়েছেন আজসু নেতা চন্দ্রপ্রকাশ চৌধুরিও। যিনি তাঁর দলের শীর্ষনেতা সুদেশ মাহাতোর নিকট আত্মীয়।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১২
Share:

ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসকে (বাঁ দিকে) শুভেচ্ছা সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী

শরিক দলের উপরে ভরসা নেই। তাই ঝাড়খণ্ডে বন্ধু দলকে নিজেদের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে রাজ্য শাসন করতে চাইছে বিজেপি।

Advertisement

আজ সকালে রাঁচির মোরাবাদি ফুটবল ময়দানে জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিজেপি নেতা রঘুবর দাস। তিনিই হলেন রাজ্যের প্রথম অনুপজাতি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গেই শপথ নিয়েছেন বিজেপির চন্দ্রেশ্বরপ্রসাদ সিংহ, লুইস মরান্ডি, নীলকন্ঠ মুন্ডা। শপথ নিয়েছেন আজসু নেতা চন্দ্রপ্রকাশ চৌধুরিও। যিনি তাঁর দলের শীর্ষনেতা সুদেশ মাহাতোর নিকট আত্মীয়।

নিজেদের শরিক আজসুকে নিয়েই চিন্তা এখন বিজেপির অন্দরে। সে জন্য জোট সরকার গড়েও রাজ্যে নতুন অঙ্কে এগোতে চাইছে বিজেপি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার শীর্ষনেতা বাবুলাল মরান্ডিকে সঙ্গে চাইছে তারা। শনিবার রাতে বিকাশ মোর্চার বিধায়ক প্রদীপ যাদব জানান, গত কালই বাবুলালকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বিকাশ মোর্চাকে বিজেপির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই দলের বিধায়কদের বিজেপিতে টানতেই এই উদ্যোগ।

Advertisement

বিজেপির এ রাজ্যের পর্যবেক্ষক ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত এমন প্রস্তাবের কথা স্বীকার করেছেন। বিজেপি শিবিরের খবর, আজসু নেতা সুদেশ অতীতে জোট সরকারকে সমর্থন দিয়ে নিজে দু’বার উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ দফতর নিয়েছেন। এ বারে সুদেশ হেরেছেন ঠিকই, কিন্তু সমর্থনের বিনিময়ে দু’জন মন্ত্রী চেয়েছেন। রাজ্যসভার আসনের জন্যও তিনি দরকষাকষি শুরু করতে পারেন বলেই বিজেপির আশঙ্কা।

এই মুহূর্তে ঝাড়খণ্ডে কে ডি সিংহের ছেড়ে যাওয়া রাজ্যসভার আসনটি খালি রয়েছে। তিনি এখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূলের সাংসদ। ওই আসনটিতে নির্বাচন আটকে রয়েছে হাইকোর্টে মামলার জন্য। আবার দিল্লির বিজেপি নেতৃত্বও চাইছেন রাজ্যসভায় নিজেদের প্রতিনিধি বাড়াতে। এই সব কারণেই বাবুলালকে অমিত শাহের প্রস্তাব।

বিজেপির এক নেতার কথায়, লোকসভা আর বিধানসভা-দুটি নির্বাচনেই বাবুলাল হেরে গিয়েছেন। তিনি নিজেই এখন বিভ্রান্ত। বিজেপির প্রস্তাব ভেবে দেখার জন্য সময় চেয়েছেন। মিশে গেলে দু’পক্ষেরই লাভ হবে বলে বাবুলালকে বুঝিয়েছে বিজেপি। অমিত শাহদের অঙ্ক হল, দুই দল মিশে যাওয়ার পরে বাবুলালকে রাজ্যসভার প্রতিনিধি করলে বিজেপিরই সাংসদ সংখ্যা বাড়বে। পাশাপাশি, রাজ্যেও বাড়বে বিজেপির আটজন বিধায়ক। ঝাড়খণ্ডের সরকার সুরক্ষিত হবে। বিজেপির এখন ৩৭টি আসন রয়েছে। ৮ জন বিধায়ক চলে এলে তারা এক লাফে ম্যাজিক ফিগারের চেয়ে তিনটি আসন বাড়িয়ে নিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে ৫ জন বিধায়ক নিয়ে বর্তমান সরকারকে সমর্থন দেওয়া সুদেশের উপরে আর নির্ভর করতে হবে না।

রঘুবর দাসের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত হতে পারেননি। ঘন কুয়াশায় দিল্লি থেকে তাঁর বিমান উড়তে পারেনি। তবে বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, বেঙ্কাইয়া নায়ডু, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীসরা শপথের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তবে আজ বাবুলাল মরান্ডি সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন। শপথের অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি বিজেপির বর্তমান জোট শরিকের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। মঞ্চের নীচে সাধারণ দর্শকদের সঙ্গে বসেছিলেন বাবুলাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন