জঙ্গি গতিবিধির নজরদারিতে নিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের আইন-শৃঙ্খলার কাজে বহাল করছে বিহার সরকারএমনই নালিশ গিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। তার প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসল রাজ্য প্রশাসন।
মাওবাদী অধ্যুষিত জেলাগুলিতে বিশেষ ভাবে মোতায়েন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ওই অফিসারদের দিয়ে অন্য কাজ না-করানোর নির্দেশ জারি করলেন রাজ্য পুলিশের আইজি অমিত কুমার।
বিহারের মাওবাদী-প্রবণ জেলায় বিশেষ ভাবে নজরদারি চালাতে এক জন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসার দিয়েছে কেন্দ্র। অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে নালিশ যায়। তার পরই মাওবাদী জেলাগুলির দায়িত্ব এবং আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা রাজ্য পুলিশের আইজি অমিত কুমার এ নিয়ে পদক্ষেপ করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট জেলাগুলির ডিআইজি এবং পুলিশ সুপারদের চিঠি দিয়ে তিনি এ বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আইজি বলেন, “নির্দিষ্ট কোনও দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসারকে দিয়ে সেই কাজই করানো উচিত। সবাইকে সেটাই সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিহারের ২১টি জেলা মাওবাদী প্রভাবিত। তার মধ্যে ১৬টি অতি-সংবেদনশীল। ১৬টি জেলায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পাঠানো বিশেষ অফিসাররা পৌঁছেছেন। ২০১৩ সালে রাজ্যে শ’দেড়েক জঙ্গিহানার ঘটনা ঘটে। হামলায় পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ মিলিয়ে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। মাওবাদী মোকাবিলায় ২২ কোম্পানি সিআরপি এবং দুই কোম্পানি কোবরা বাহিনীও মোতায়েন রয়েছে বিহারে। রাজ্যের ১৬টি অতি-জঙ্গিপ্রবণ জেলার মধ্যে রয়েছে গয়া, ঔরঙ্গাবাদ, অরওয়াল, শিউহর, রোহতাস, জামুই, কৈমুর, বাঁকা। ওই জেলাগুলিতে জঙ্গি গতিবিধির উপর নজরদারি চালানোর দায়িত্ব রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারদের উপরে। তাঁদের সাহায্য করবে রাজ্য পুলিশ।
রাজ্যের এক পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘ওই অফিসারদের অনেক ক্ষেত্রেই দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ দেওয়া হচ্ছে না। আইজির নির্দেশ এসেছে। এ বার থেকে এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
কয়েক দিন আগে রাজ্য পুলিশের সদর দফতর কয়েক জন এসপি-কে বদলি করে। পুলিশকর্তাদের দাবি, এটি ‘রুটিন’ বদলি। কিন্তু পুলিশের অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠির ভিত্তিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভোটের আগে কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনও বিহারে মাওবাদী জঙ্গিদের গতিবিধি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।
রাজ্য পুলিশের ডিজি অভয়ানন্দ বলেছেন, “এই মুহূর্তে নির্বিঘ্নে লোকসভা নির্বাচন শেষ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”