দিল্লিতে ফের ভোট চান কেজরীবাল

দিল্লিতে রাজ্য সরকার গড়া নিয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের মতো দলগুলি কী ভাবছে, তা আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আর রাজধানীর সরকার গড়া নিয়ে এক দিকে যখন দেশের শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ, তখনই দিল্লিতে নতুন করে নির্বাচন দাবি করলেন আম আদমি পার্টির নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সন্ধেয় তিনি দিল্লির উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গের সঙ্গে দেখা করেন। দিল্লি বিধানসভা ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে নতুন করে নির্বাচন করানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৯
Share:

দিল্লিতে রাজ্য সরকার গড়া নিয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের মতো দলগুলি কী ভাবছে, তা আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আর রাজধানীর সরকার গড়া নিয়ে এক দিকে যখন দেশের শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ, তখনই দিল্লিতে নতুন করে নির্বাচন দাবি করলেন আম আদমি পার্টির নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সন্ধেয় তিনি দিল্লির উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গের সঙ্গে দেখা করেন। দিল্লি বিধানসভা ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে নতুন করে নির্বাচন করানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

Advertisement

দিল্লিতে সরকার গড়েও জন লোকপাল বিল পাশ করাতে ব্যর্থ হওয়ায় ফেব্রুয়ারি মাসে ইস্তফা দেন কেজরীবাল। আপ নেতৃত্ব প্রথম থেকেই দিল্লিতে নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানালেও কেন্দ্র দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে মত দেয়। যদিও বিধানসভাকে জিইয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় আপ শিবির। সেই মামলার প্রথম শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কংগ্রেস ও বিজেপি দু’দলের কাছেই জানতে চেয়েছে, সরকার গড়া নিয়ে তারা কী ভাবছে। ৩১ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

একটি পর্যবেক্ষণে আদালত মন্তব্য করেছে, জন লোকপাল বিলের প্রশ্নে কংগ্রেস ও বিজেপি-দু’দলকে একজোট হতে দেখা গিয়েছে। যা বুঝিয়ে দিচ্ছে, কংগ্রেস ও বিজেপি হাত মিলিয়ে সরকারও গড়তে পারে। কেননা রাজনীতিতে চিরস্থায়ী শত্রু বলে কিছু হয় না। আজকের প্রতিপক্ষ আগামিকাল ঘনিষ্ঠ বন্ধুও হতে পারে। তাই দিল্লিতে সরকার গড়তে কংগ্রেস ও বিজেপির মতো দল গুলি হাত মেলাতে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দেয় কোর্ট।

Advertisement

আজ ওই মামলার শুনানিতে সরকার গড়া প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করার ঝুঁকি নেয়নি দু’দল। দু’দলেরই বক্তব্য, লোকসভা নির্বাচনের কাজে তারা এখন ব্যস্ত রয়েছে। তাই এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। ওই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ এপ্রিল। ওই সময়ের মধ্যে সরকার গড়ার বিষয়ে দু’দল কী ভাবছে তা কিন্তু স্পষ্ট করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সরকার প্রশ্নে দু’দলের নীরবতা নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছেন কেজরীবাল। তাঁর টুইট, “কংগ্রেস ও বিজেপি কেন নির্বাচন থেকে পালাচ্ছে?” আপ নেতৃত্বের বক্তব্য, এই মুহূর্তে দিল্লিতে ভোট হলে কংগ্রেস ও বিজেপি যে হালে পানি পাবে না তা বুঝতে পারছে দু’দলই। তাই দ্রুত নির্বাচনের বিপক্ষে তারা। আপ শিবির দাবি করছে, যত দ্রুত দিল্লিতে ভোট হবে তত ভাল ফল হবে তাদের, এমনকী সংখ্যাগরিষ্ঠতাও মিলবে। সে ক্ষেত্রে কারও সাহায্য ছাড়াই সরকার গড়তে পারবেন কেজরীবাল। নির্বাচন হলে কেজরি ঝড়ে কংগ্রেসের মুছে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও দাবি কেজরীবাল শিবিরের।

আজ কেজরীবাল মন্তব্য করেছেন, এই ভয়েই এখন নির্বাচনের পথে কোনও ভাবেই হাঁটতে চাইছে না কংগ্রেস। আপের অভিযোগ, কংগ্রেসের ওই ভয়কে ঢাল করে ভোটে যাওয়া বা সরকার গড়ার প্রশ্নে এড়িয়ে যাচ্ছে বিজেপি।

তবে বিজেপি প্রশ্নে দলের আশঙ্কা, কেন্দ্রে যদি নরেন্দ্র মোদী সরকার গড়তে সক্ষম হয় সে ক্ষেত্রে উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ডের মতো দিল্লিতেও বিধায়ক কেনাবেচা করে সরকার গড়ার চেষ্টা করবে বিজেপি শিবির। সে ক্ষেত্রে আপ শিবিরেও ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। সেই আশঙ্কা থেকেই লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিল আপ শিবির। দিল্লিতে লোকসভা নির্বাচন ১০ এপ্রিল। কিন্তু মামলার পরবর্তী শুনানি যেহেতু ১৭ এপ্রিল, তাই লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সম্ভাবনা রইল না রাজধানীতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন