আঞ্চলিক দলের প্রার্থীদের ভিড়ে ধানবাদে ভোট-বাক্সে সমর্থনের হিসেব কষতে পারছে না কংগ্রেস, বিজেপি। জাতীয় দুই দলের ভরসা তা-ই দলের একনিষ্ঠ সমর্থকরাই।
‘মোদী-ম্যাজিকে’ বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি। তবে স্থানীয় ভোটারদের বক্তব্যে স্পষ্ট, দলের প্রার্থী পশুপতিনাথ সিংহের কাজে তাঁরা খুব বেশি খুশি নন। অনেকে দাবি করলেন, গত লোকসভা ভোটের পর তাঁকে ফের এলাকাতে দেখা যায়নি। দিন দু’য়েক আগে নিরসায় প্রচারে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখেও পড়েন পশুপতিনাথ।
রবিবার ধানবাদে নির্বাচনী প্রচারে এসে ‘কাটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটে’ দেন কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ। তিনি বলেছিলেন, “উনি (পশুপতি) কোনওদিন ধানবাদের সমস্যা নিয়ে সংসদে মুখ খোলেননি। সারা দিন বসে শুধু পান চিবোতেন।” এই পরিস্থিতিতে ধানবাদ কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে স্বস্তিতে নেই বিজেপি। তাঁদের আশা একটাই, আঞ্চলিক দলগুলির ভোট-কাটাকুটিতে যদি কোনও ভাবে লাভবান হওয়া যায়। শহর ধানবাদ, ঝরিয়া এবং নিরসার কয়েকটি জায়গার ভোটার অবশ্য বরাবরই বিজেপির পক্ষেই থাকেন।
তবে কংগ্রেস প্রার্থী অজয় দুবে বলছেন, “বিজেপি এখানে কোনও উন্নয়ন করেনি। আমি জিতলে এলাকার হাল বদলে দেব।” কিন্তু ধানবাদে রাজনীতির গণিতে কংগ্রেসকে আপাতত পিছিয়ে থেকেই লড়াই করতে হবে। কারণ ওই কেন্দ্রে চারটি আঞ্চলিক দলের প্রার্থী ব্যক্তিগত পরিচিতির জেরেই বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি-বিরোধী ভোট টেনে নিতে পারেন।
কংগ্রেস ছেড়ে সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন চন্দ্রশেখর (দদাই) দুবে। রাজ্যের প্রাক্তন ওই মন্ত্রীর দিকে নজর রয়েছে সকলেরই। তাঁর সমর্থনে ধানবাদে প্রচার করে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে খবর, কংগ্রসকে বিপাকে ফেলে রাজনৈতিক ‘প্রতিশোধ’ নেওয়াই দদাইয়ের মূল লক্ষ্য। বোকারোর জননেতা দদাই আগে ধানবাদের সাংসদ ছিলেন। তার উপরে মমতার জন্য ধানবাদ, বোকারোর বঙ্গভাষীদের ভোটও তিনি টানতে পারেন। আরজেডি-র স্থানীয় নেতাদের একাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা সমর্থন করবেন তৃণমূল প্রার্থীকেই।
বোকারোর জেভিএম নেতা সমরেশ সিংহও এ বার ধানবাদে প্রার্থী হয়েছেন। বোকারোয় যথেষ্ট জন-সমর্থন রয়েছে ওই জেভিএম বিধায়কের।
অন্য দিকে নিরসা, সিন্দরিতে শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে এমসিসি-রও (মার্কসিস্ট সমন্বয় সমিতি)। দলের বিধায়ক অরূপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দলের হয়ে ধানবাদের ময়দানে নেমেছেন আনন্দ মাহতো। অরূপবাবুর দাবি, ধানবাদ এবং নিরসার বাঙালি ভোট আসবে তাঁদের ঝুলিতেই।
আজসু নেতা সুদেশ মাহতো ধানবাদে প্রার্থী করেছেন হেমলতা মোহনকে। রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন হেমলতা বোকারোর বাসিন্দা। নতুন প্রার্থী হলেও, সুদেশের পরিচয়ে তিনিও কিছু ভোট পাবেন।
নির্বাচনের মুখে এমনই পরিস্থিতি ধানবাদে। সে কারণেই জয়ের হিসেব মেলাতে পারছে না বিজেপি, কংগ্রেস।