নাগা-অসম বিবাদ মেটাতে বৈঠক

প্রতিবেশী দুই রাজ্য— নাগাল্যান্ড ও অসমের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনার সমাধান খুঁজতে বৈঠকে বসলেন দুই রাজ্যের সরকারি কর্তা, সমাজকর্মী, মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিদ্বজ্জনরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:০৮
Share:

প্রতিবেশী দুই রাজ্য— নাগাল্যান্ড ও অসমের মধ্যে চলতে থাকা উত্তেজনার সমাধান খুঁজতে বৈঠকে বসলেন দুই রাজ্যের সরকারি কর্তা, সমাজকর্মী, মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিদ্বজ্জনরা।

Advertisement

আজ গুয়াহাটির আইআইবিএম প্রেক্ষাগৃহে ওই আলোচনার সূচনায় নাগা মানবাধিকারকর্মী নিকেতু ইরালু বলেন, ‘‘অনেক আগেই এই আলোচনায় বসা দরকার ছিল। কিছু অপরাধীর প্ররোচনায় পা দিয়ে দুই রাজ্যের মানুষ হানাহানি শুরু করছেন। একে প্রশ্রয় দেওয়া যায় না। গুজবে কান দেওয়া বা দুষ্কৃতীদের ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না।’’ শিক্ষাবিদ উদয়ন মিশ্রের মতে, সমস্যাসঙ্কুল সীমানা সম্পর্কে রাজধানীর ও উচ্চশ্রেণির মানুষদের অবহেলা তথা সুযোগসন্ধানী সমাজবিরোধীদের ইচ্ছাকৃত হিংসার ফলেই অসমীয় ও নাগারা নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন।

নাগা হো হোর সভাপতি চুবা ওঝুকুমের বক্তব্য, নাগা ও অসমীয়াদের মধ্যে বহুযুগের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই পারস্পরিক আলোচনাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের চাবিকাঠি। অসম সাহিত্য সভার সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি বরা মনে করিয়ে দেন, সাহিত্য সভার সূচনা হয়েছিল নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমাতেই। নাগা মাদার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা রোজমেরি জুভিচু বলেন, ‘‘যে কোনও হিংসা বা বিদ্বেষ মেটাতে সব চেয়ে কার্যকর হয়ে উঠতে পারেন মহিলারাই।’’ তিনি অসমের মহিলাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘দুই পারের মেয়েরা যদি পরিবেশ, সমাজ, বন্ধুত্ব ও বিশ্বাস রক্ষায় একজোট হন, তবে সমস্যা কমতে বাধ্য।’’

Advertisement

আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্যের পরামর্শ, দুই প্রতিবেশীকে নিয়ে নিয়মিত আলোচনায় বসা প্রয়োজন। তবেই বিভিন্ন সমস্যার সমাধানসূত্র বের হবে।

সাংবাদিক প্রশান্ত রাজগুরু ও বানো হারালুর মতে, এই ধরনের সীমানা-সমস্যার সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীল ও সংযত হতে হবে। খামোকা উত্তেজনা ছড়ালে ও একপেশে সংবাদ পরিবেশন করলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যায়। উত্তর-পূর্ব পরিষদের সদস্য সি কে দাস ও উজানি অসম ডিভিশনের কমিশনার সৈয়দ ইফতিকার হুসেনের মতে— সীমানা এলাকাগুলি এমনিতেই পিছিয়ে পড়া। শান্তি বজায় রাখা সেখানকার উন্নয়নের প্রাথমিক ও প্রধান শর্ত। এই কাজে সামাজিক সংগঠনগুলিকেও এগিয়ে আসতে হবে।

দু’পক্ষ একজোট হয়ে এ দিন প্রস্তাব গ্রহণ করে, সীমানা সমস্যা মোকাবিলায় স্থায়ী দ্বিপাক্ষিক মঞ্চ গড়া প্রয়োজন। এই উদ্দেশে অসম সাহিত্য সভা ও নাগা হো হো একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি গড়বে। যাঁরা নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ব্যবস্থা করবে। দুই রাজ্যের মধ্যে নিয়ম করে শিল্প, কলা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বাণিজ্য ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত মত ও পথের আদান-প্রদান চালু করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন