কাল বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের আস্থা ভোট। এখনও পর্যন্ত যা হিসেব তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে তাঁর কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু এর আগে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে নিজের আস্থা ভোট এড়াতে পারলেও, নীতীশের আস্থা ভোটের এই প্রক্রিয়ায় রীতিমতো ফাঁপরে পড়েছেন জিতনরাম মাঁঝি ও তাঁর সঙ্গী-বিধায়করা। কারণ খাতায় কলমে এই বিদ্রোহী বিধায়করা তো জেডিইউয়ের বাইরে নন। সেই কারণেই কালকের আস্থা ভোটে দলীয় হুইপের মুখে সঙ্কটে পড়েছেন তাঁরা। জিতনরাম শিবিরের দাবি তাদের সঙ্গে ১২ জন বিধায়ক আছেন। তাঁরা যদি নীতীশ বিরোধিতা করেন তবে তাঁদের বিধায়ক পদই খারিজ হয়ে যাবে।
মাঁঝি শিবিরে থাকা প্রাক্তন মন্ত্রী বৃশেন পটেল জানিয়ে দিয়েছেন, “প্রয়োজন হলে বিধায়ক পদ যাবে। কিন্তু নীতীশ-বিরোধিতার পথ থেকে সরব না।” তবে বৃশেন যত সহজে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বা স্বয়ং মাঁঝি তাঁর সিদ্ধান্ত নেবেন, তাঁর শিবিরের অন্য বিধায়কদের সিদ্ধান্ত অত সহজ হবে না বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা। পদ গেলে বিধায়ক হিসেবে সুযোগ-সুবিধা হাতছাড়া হবে। একই সঙ্গে মেয়াদ পূর্ণ না করলে প্রথম বারের বিধায়করা পেনশনও পাবেন না। এই সুযোগে নীতীশ শিবির ঠিক করেছে, আগে যাঁরা বিদ্রোহ করেছেন তাঁরা যদি এখন দলের পক্ষে ভোট দেন তবে পুরনো অপরাধ ক্ষমা করা হবে।
বিধানসভায় জেডিইউয়ের মুখ্য সচেতক শ্রবণ কুমার জানিয়েছেন, “জেডিইউয়ের ১১০ জন বিধায়ককেই এই হুইপ মানতে হবে। বিদ্রোহী বিধায়কদের কাছে, এমনকী জিতনরাম মাঁঝিকেও দলের হুইপ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।” বিহার বিধানসভার মোট শক্তি ২৪৩ হলেও এই মুহূর্তে সদস্য সংখ্যা ২৩৩। আস্থা ভোটে জয়ী হতে প্রয়োজন ১১৭ জনের সমর্থন। তা নিয়ে নীতীশের কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
এই পরিস্থিতিতে মাঁঝি শিবিরের এক নেতার কথায়, “আমাদের অবস্থা শাঁখের করাতের মতো। আগে গেলেও কাটবে, পিছনে গেলেও কাটবে।” এক বিধায়কের বক্তব্য, “আমাদের অনেকটাই ভরসা ছিল লালুজির উপর। কারণ নীতীশ যে ভাবে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন তাতে লালুপ্রসাদ ক্ষুব্ধ।” লালুর সেই অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে কিছু করা যায় কিনা তা ভেবে মাঁঝি শিবির থেকে আরজেডি প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগও রাখা হচ্ছিল। মাঁঝি শিবিরের নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী মহাচন্দ্র সিংহের কথায়, “পরিস্থিতি জটিল। এই অবস্থায় আমাদের কিংকর্তব্য ঠিক করতে আমরা আলোচনা করছি। আজ রাতেও বৈঠক হবে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তবে আরজেডি ও কংগ্রেস ইতিমধ্যেই আস্থা ভোটে নীতীশের পক্ষে হুইপ জারি করেছে।