দেশে প্রাথমিক স্তরে স্কুলছুটের হিসেবটা এখনও যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে সংসদে স্বীকার করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।
দেশের সব শিশুকে শিক্ষার আঙিনায় টানতে শিক্ষার অধিকার আইন চালু হয়েছে প্রায় তিন বছর। তা সত্ত্বেও প্রায় সাড়ে চার শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী কয়েক বছর পড়ার পরেই স্কুল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে বলে আজ স্বীকার করেন স্মৃতি। তাঁর বক্তব্য, “স্কুলছুটের হার সব থেকে বেশি আদিবাসী এলাকায়।”
স্মৃতির এই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, দেশের বড় অংশের আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীরা এখন প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। এক দিকে যেমন সচেতনতার অভাব রয়েছে, তেমনই একটু বড় হলেই এরা রুটিরুজির জন্য স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। এ ছাড়া আদিবাসী বাবা-মায়েরা রোজগারের আশায় অন্য জায়গায় গেলে তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনাও থমকে যায়।
কিছু আমলার বক্তব্য, বহু স্কুলেই পরিকাঠামোর অভাব আছে। সেটাও মাঝপথে স্কুল ছাড়ার বড় কারণ। সমস্যাটা বেশি ছাত্রীদের। মন্ত্রক তার সমীক্ষায় দেখেছে, আলাদা শৌচাগার না থাকায় বহু ছাত্রী স্কুল ছেড়েছে। পড়ুয়াদের নিরাপাত্তা ও অন্য বিভিন্ন পরিকাঠামো সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে গত ১১ জুলাই দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন স্মৃতি। তাঁর কথায়, “কোন রাজ্যে কী ধরনের সমস্যা রয়েছে তা-ও সুনির্দিষ্ট ভাবে জানাতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।”
রাজ্য তাদের সমস্যাগুলি চিহ্নিত করলে কেন্দ্র সে বিষয়ে সাহায্যের আশ্বাস দিলেও সর্বশিক্ষা অভিযান খাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এ নিয়ে আজ লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে সরব হন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু। শুধু তিনিই নন, চলতি বাজেটে শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো সামাজিক ক্ষেত্রগুলিতে যে ভাবে বাজেট বরাদ্দ ছাঁটাই হয়েছে তা নিয়ে সরব হয়েছে অন্য বিরোধী দলগুলিও। বিরোধীদের বক্তব্য, এর ফলে রাজ্যের ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপবে। যদিও বিজেপির পাল্টা যুক্তি, এটা সম্পূর্ণ বাজেট নয়। আগামী আট-নয় মাসের খরচের হিসেব ধরে বাজেটে ওই বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরকারি পদাধিকার বলে সর্বশিক্ষা অভিযানের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী মোদী। আর ডেপুটি-চেয়ারপার্সন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি। আজ প্রশ্নোত্তর পর্বে সুগতবাবু জানতে চান, সরকারে আসার পরে শিক্ষা অভিযান নিয়ে তাঁদের কোনও বৈঠক হয়েছে কিনা? জবাবে স্মৃতি বলেন, “এখনও হয়নি। তবে তা দ্রুত হবে।”