পুলিশ সুপার, তাঁর বন্ধু ও রাঁধুনিকে অপহরণ করে মারধর করল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। পঞ্জাব সশস্ত্র পুলিশের সুপার সালবিন্দর সিংহ ও তাঁর বন্ধু রাজেশ বর্মা শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু সালবিন্দরের রাঁধুনি এখনও নিখোঁজ। অপহৃত সুপারের গাড়ির কাছে উদ্ধার হয়েছে স্থানীয় এক বাসিন্দার মৃতদেহ। হামলাকারীরা পাক জঙ্গি হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ।
পুলিশ সুপারের উপরে এই হামলা অকালি-বিজেপি জমানায় পঞ্জাবে অরাজকতা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনার জেরে পঞ্জাবে সতর্কতা জারি হয়েছে।
গত কাল রাতে পাঠানকোটের নারোট মেহরা এলাকা থেকে ফিরছিলেন সালবিন্দর, রাজেশ ও পুলিশ সুপারের রাঁধুনি মদন লাল। সালবিন্দরের অভিযোগ, দীননগর এলাকার কাছে সেনার পোশাকে পাঁচ জন হাত দেখিয়ে তাঁদের গাড়ি থামাতে বলে। থামতেই সশস্ত্র ওই পাঁচ জন গাড়িতে উঠে তাঁদের মারধর শুরু করে। কিছু ক্ষণ পরে সালবিন্দরকে ধাক্কা মেরে গাড়ি থেকে ফেলে দেয় তারা। পরে রাজেশ বর্মাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। মরে যাওয়ার ভান করে তিনি রেহাই পান বলে দাবি পুলিশের। রাজেশকে পঞ্জাব-হিমাচল সীমানায় দামতাল পাহাড়ের কাছে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়। মদন লালের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তাজপুর গ্রামের কাছে উদ্ধার হয় অপহৃত সুপারের গাড়িটি। কিন্তু সেটির কাছে একটি মৃতদেহ পায় পুলিশ। ফলে, রহস্য আরও গভীর হয়। পরে জানা যায়, দেহটি স্থানীয় বাসিন্দা ইকগার সিংহের। পুলিশের ধারণা, জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়া থেকে ফেরার পথে ইকগারকে খুন করে তাঁর ইনোভা গাড়িটি হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। তার পরে সেই গাড়িতে চেপে এসেই তারা সালবিন্দর সিংহের উপরে হামলা করে।
কিন্তু কেন এই হামলা?
এখনও এই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব পায়নি পুলিশ। তবে দুষ্কৃতীরা সেনার পোশাকে থাকায় কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন। কারণ, গত বছর জুলাই মাসে দীননগর থানায় সেনার পোশাকেই হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ডিআইজি (সীমান্ত) কানওয়ার প্রতাপ সিংহের কথায়, ‘হামলাকারীরা পাক জঙ্গি হতে পারে। ওরা সালবিন্দরের মোবাইল থেকে পাকিস্তানে ফোন করেছে বলেও মনে হচ্ছে।’’এই প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী গুরদাসপুর ও পাঠানকোটে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
ইকগার সিংহের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন আইজি (সীমান্ত) লোকনাথ আংরা ও অন্য পুলিশ কর্তারা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে সালবিন্দর ও রাজেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।