পাশেই আছি, মানিকের প্রশংসায় রাজনাথ

নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে তো যানইনি, কোনও প্রতিনিধিও পাঠাননি। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সে পথে হাঁটছেন না। নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যোগাযোগ রেখেছেন তাঁর সঙ্গে। সশরীর হাজির থেকে ছিলেন নীতি আয়োগ বৈঠকেও। এ বারও ত্রিপুরা সফরে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে স্বাগত জানালেন আগরতলায়। রাজনাথও ভূয়সী প্রশংসা করলেন বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীর। আশ্বাস দিলেন সন্ত্রাস দমনে রাজ্যের পাশে থাকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:০৯
Share:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে উত্তরীয় পরিয়ে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ত্রিপুরা সরকারের অতিথিশালায়। ছবি:বাপি রায়চৌধুরী।

নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজে তো যানইনি, কোনও প্রতিনিধিও পাঠাননি। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু সে পথে হাঁটছেন না। নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যোগাযোগ রেখেছেন তাঁর সঙ্গে। সশরীর হাজির থেকে ছিলেন নীতি আয়োগ বৈঠকেও। এ বারও ত্রিপুরা সফরে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে স্বাগত জানালেন আগরতলায়। রাজনাথও ভূয়সী প্রশংসা করলেন বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীর। আশ্বাস দিলেন সন্ত্রাস দমনে রাজ্যের পাশে থাকার।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘উন্নয়নে’ কেন্দ্রীয় সরকার যে যথেষ্ট আগ্রহী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতোই রাজনাথ বার বার সে কথা মনে করিয়ে দেন। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় মণিপুর ও ত্রিপুরাকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। জঙ্গি-সমস্যা মোকাবিলায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে রাজনাথ সিংহ জানান, “ত্রিপুরার জঙ্গি-সমস্যা সমাধানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিকবাবু নিজেই কার্যকরী পদক্ষেপ করেছেন। এর পরেও যদি কোনও কেন্দ্রীয় সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তা হলে অবশ্যই সেটা দেওয়া হবে।”

Advertisement

মণিপুর ও ত্রিপুরা দু’দিনের সফর শেষে আগরতলায় এক সাংবাদিক বৈঠকে আজ রাজনাথ জানান উত্তর-পূর্র্বাঞ্চলের উন্নয়নে প্রধান বাধা ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ’। যত দিন না ‘জঙ্গি-সমস্যা’ কমবে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন

হওয়া দূর অস্ত্। দৃঢ় ভাবেই বলেন, “কেন্দ্রের সরকার হিংসার সঙ্গে কোনও সমঝোতা করবে না।” পাশাপাশি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “হিংসা ছেড়ে আলোচনার পথে আসুন। সমস্যার সমাধান করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এখনও আগ্রহী।”

উত্তর-ত্রিপুরার কাঞ্চনপুরের ‘ব্রু’উদ্বাস্তুদের সমস্যার সমাধানেও কেন্দ্রীয় সরকার যে যথেষ্ট সচেষ্ট, সে কথাও তিনি আজ উল্লেখ করেন। মিজোরাম থেকে আগত কাঞ্চনপুরে ব্রু উদ্বাস্তুদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজনাথের এক প্রস্ত আলোচনাও হয়েছে আজ। তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেএক গুচ্ছ দাবি-সহ একটি সনদ তুলে দিয়েছেন। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, ব্রু’রা মিজোরামে ফিরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে রাজনাথ এটাও জানান, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ব্রু উদ্বাস্তুদের উপযুক্ত ‘নিরাপত্তা’র ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য সরকারকে। ব্রু-দের সঙ্গে কোনও রকম ‘বৈষম্য’ করাও চলবে না।

কিন্তু গত ১৬-১৭ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার, ত্রিপুরা ও মিজোরাম সরকার বহু আলাপ-আলোচনা করার পরেও কাঞ্চনপুর শিবিরের ব্রু-উদ্বাস্তু সমস্যা মেটেনি কেন? এ প্রশ্নের কোনও সদর্থক উত্তর দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। “আমি বিশ্বাস করি, ত্রিপুরার ব্রু উদ্বাস্তুদের সমাস্যা সমাধান হবে।” এ কথা বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আগরতলায় আজকের বৈঠকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা ছিল মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালথান হাওলার। কিন্তু মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী আসেননি। কী কারণে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী আজকের বৈঠকে থাকতে পারলেন না, সে নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে পারেননি মানিক সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনায় উঠে এসেছে ব্রু-সমস্যা ছাড়াও রাজ্যের জঙ্গি সমস্যা, সীমান্ত বেড়া-সহ নানা প্রসঙ্গ। বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী জঙ্গিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি বাজেয়াপ্ত করার জন্যও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন মানিকবাবু। তাঁর বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার আশাবাদী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন