পরেশের ভাণ্ডার থেকে উদ্ধার আরও অস্ত্রশস্ত্র

বাংলাদেশের হবিগঞ্জে ত্রিপুরা সীমান্তের লাগোয়া সাতছড়ির জঙ্গলে লুকোনো বাঙ্কার থেকে বুধবারও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে। এগুলি উত্তর পূর্ব ভারতের জঙ্গি সংগঠন আলফার অস্ত্রভাণ্ডারের অংশ বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০৩:০০
Share:

বাংলাদেশের হবিগঞ্জে ত্রিপুরা সীমান্তের লাগোয়া সাতছড়ির জঙ্গলে লুকোনো বাঙ্কার থেকে বুধবারও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে। এগুলি উত্তর পূর্ব ভারতের জঙ্গি সংগঠন আলফার অস্ত্রভাণ্ডারের অংশ বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)-এর মুখপাত্র উইঙ্গ কম্যান্ডার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, দু’দিনের তল্লাশিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। বছর দশেক আগে চট্টগ্রামে আটক ১০টি ট্রাকে বোঝাই আলফার অস্ত্রগুলির সঙ্গে এই অস্ত্রগুলির সাদৃশ্য রয়েছে।

Advertisement

ত্রিপুরার আলফা-সহযোগী জঙ্গি সংগঠন এটিটিএফ-এর প্রধান রঞ্জিত দেববর্মাকে সম্প্রতি গ্রেফতারের পরে জেরা করে সাতছড়ির জঙ্গলে পরেশ বরুয়ার অস্ত্রভাণ্ডারের খবর পান ভারতীয় গোয়েন্দারা। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তল্লাশি চালিয়েই পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্যে একটি টিলার ওপরে কয়েকটি কুয়োর খোঁজ মেলে। তার ভেতরেই সাতটি বাঙ্কারের সন্ধান মেলে। র্যাব জানিয়েছে, দ্বিতীয় দিনে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে মেসিনগান, রাইফেল ও বন্দুকের কয়েক হাজার গুলি রয়েছে। এ ছাড়া অজস্র গ্রেনেড, মেসিনগান ও রকেট লঞ্চার মিলেছে। কাল প্রথম দফায় প্রায় ২০০ কামান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, বিস্ফোরক ও বিপুল গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছিল।

গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, আলফার বহিষ্কৃত নেতা পরেশ বরুয়া এখন পুরোদস্তুর অস্ত্র চোরাচালানকারী। চিন থেকে তাঁর পাঠানো অস্ত্রশস্ত্রের একটা অংশ কক্সবাজার বা চট্টগ্রাম হয়ে সাতছড়ির এই বাঙ্কারে জমা করে রাখা হত। বাংলাদেশের ইসলামি জঙ্গিরাই এই পথটুকুতে বাহকের কাজ করতো। তার পরে এটিটিএফ জঙ্গিরা সুযোগ মতো সেই অস্ত্র সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরায় নিয়ে গিয়ে অন্য জঙ্গি সংগঠনের হাতে তুলে দিত। গত বছর জুনে বগুড়ায় আনারসের একটি ট্রাক বোঝাই অস্ত্রশস্ত্র ধরা পড়ার পরে চালক জানিয়েছিলেন, সাতছড়ি থেকে তা আনা হয়েছে। কিন্তু তল্লাশির পরেও পুলিশ সেখানে কোনও কিছুর হদিশ পায়নি। স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে অস্ত্র চোরাচালানকারীদের যোগসাজস থাকতে পারে আশঙ্কা করে তল্লাশির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল র‌্যাবের হাতে। অভিযানের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশকে কিছু জানানোই হয়নি। মঙ্গলবার রাতভর তল্লাশির পরে র্যাবও প্রথমে খালি হাতেই ফিরে আসছিল। তার পরে এক তল্লাশিকারী দড়ির মই বেয়ে একটি কুয়োর মধ্যে নামতেই গোপন বাঙ্কারের খোঁজ মেলে। সেই বাঙ্কারেই মজুত করা ছিল অস্ত্রশস্ত্র। এর পরে অন্য কয়েকটি কুয়োর মধ্যেও বাঙ্কারের সন্ধান মেলে। র‌্যাবের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার জন্য আজ অভিযান বন্ধ করা হলেও এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। আরও অস্ত্রের সন্ধানে কালও তল্লাশি চলবে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন