ফাঁকা সভায় গুঞ্জন, ভাগ্যিস রাহুল নেই

রাহুল গাঁধী কবে সফল হবেন, লম্বা ছুটির পরে ফিরে এসে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিলেই গুটি থেকে প্রজাপতি সত্যিই উড়ে যাবে কিনা, তা নিয়ে কংগ্রেসে জল্পনা আর উদ্বেগের অন্ত নেই। কিন্তু এ সবের মধ্যেই আজ দুপুরে রাহুল অনুগামীদের মধ্যেই স্বস্তির হাওয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০২
Share:

রাহুল গাঁধী কবে সফল হবেন, লম্বা ছুটির পরে ফিরে এসে তিনি দলকে নেতৃত্ব দিলেই গুটি থেকে প্রজাপতি সত্যিই উড়ে যাবে কিনা, তা নিয়ে কংগ্রেসে জল্পনা আর উদ্বেগের অন্ত নেই। কিন্তু এ সবের মধ্যেই আজ দুপুরে রাহুল অনুগামীদের মধ্যেই স্বস্তির হাওয়া। ভাগ্যিস তিনি নেই! থাকলে যে কী হতো, নেতার মানসম্মানের হাল কোথায় পৌঁছত, সে কথা ভেবেই অস্থির তাঁরা।

Advertisement

কেন? ঘটনা হল, বহু ঢক্কানিনাদের পরে জমি অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সংসদ ভবনের অদূরে যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সভা করেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। মঞ্চে তখন তারকার মেলা। আহমেদ পটেল, দিগ্বিজয় সিংহ, অম্বিকা সোনি, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, অজয় মাকেন, দীপেন্দ্র হুডা, জয়রাম রমেশ। অথচ শ্রোতা কোথায়! দলের সমর্থক, কৃষক, শ্রোতা মিলিয়ে বসে আছেন সাকুল্যে পাঁচশো জন। দিল্লি আর সংলগ্ন হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান থেকে বাস, ট্রেন, গাড়ি ভাড়া করে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে দু’হাজার লোকও জড়ো করতে পারেনি ১৩০ বছরের দল।

সভাস্থল থেকে ওয়াকি-টকিতে এক পুলিশকর্তা কন্ট্রোলরুমে জানাচ্ছেন, স্যার বড় জোর ছ’-সাতশো লোক হবে! ভাবটা এমন যে আগে থেকে জানলে দশ-বারো জন কনস্টেবল পাঠালেই হতো! ভিড় সামলানোর আগাম সতর্কতা হিসেবে জলকামান, র‌্যাফ, ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করার জন্য আফসোসও শোনা গেল পুলিশের গলায়। তবে সভাস্থল থেকে জয়রাম রমেশ, আহমেদ পটেল, দিগ্বিজয় সিংহরা মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে ভোলেননি।

Advertisement

তবে সভার পাশে দাঁড়িয়ে দশ জনপথের ঘনিষ্ঠ মধ্যপ্রদেশের এক তরুণ নেতার মন্তব্য, এর পরেও রাহুল গাঁধী ছুটি নেবেন না! সত্যিই যদি রাহুল উপস্থিত থাকতেন তা হলে আজ তাঁর মর‌্যাদা কোথায় থাকত! রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতাটির ক্ষোভ, এর পরেও সংগঠন থেকে আহমেদ পটেল, দিগ্বিজয়দের সরাতে গেলে বাধা দেওয়া হবে? মজা করে তিনি বলেন, শুধু ছুটি কেন, এই দলকে দাঁড় করাতে গেলে রাহুলের ধ্যানে বসা উচিত। যদি দৈব শক্তি পেয়ে যান তিনি!

বাস্তব পরিস্থিতিটা কেমন সেটা বোঝাতে গিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতা কমল নাথ বলেন, “সনিয়ার কাছে গেলে তিনি পাঠান রাহুলের কাছে। রাহুল দেখান সনিয়াকে। এর চেয়ে রাহুল সভাপতি হলেই ভাল। সাফল্য বা ব্যর্থতা, পুরোটাই তাঁর হবে।”

আজ হাসতেই পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! সংসদে যখন তুলকালাম চলছে, তখন কংগ্রেসের বিক্ষোভ সভা দেখে তিনি ভাবতে পারেন, এখনও তিনি কত নিরাপদ!

সংসদ চলাকালীন রাহুল তিন সপ্তাহের ছুটি নিয়েছেন। এপ্রিলে কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার কথা। ছুটি নেওয়া নিয়ে চলছে নানা কটাক্ষ। আজ দিল্লি কংগ্রেসের এক নেতা টুইটারে রাহুলের একটি ছবি দিয়ে দাবি করেন, উত্তরাখণ্ডে রয়েছেন রাহুল। দল জানিয়েছে ছবিটা পুরনো। কিন্তু নতুন যে ছবি আজ যন্তর মন্তরে দেখা গিয়েছে, সেটাই কংগ্রেসের নয়া অস্বস্তির কারণ। তবে স্বস্তি একটাই, ভাগ্যিস তিনি নেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন